বিএনপির বহিষ্কৃত দুই নেতা ইসিতে

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ইসিতে গিয়ে সিইসির সঙ্গে আলোচনা করেছেন সংস্কাপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক দুই সংসদ সদস্য।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2015, 12:24 PM
Updated : 2 March 2015, 12:24 PM

তারা হলেন- সাবেক হুইপ বরিশালের শহীদুল হক জামাল এবং অবসরপ্রাপ্ত আমলা রাজশাহীর আবু হেনা।

সোমবার বিকালে তারা দুজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে আধা ঘণ্টা বৈঠক করে এক গাড়িতেই ইসি সচিবালয় ছাড়েন।

সিইসির একান্ত সচিব এ কে এম মাজহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সিইসির সঙ্গে আলাপ শেষে যাওয়ার সময় ডিসিসির সীমানা সংক্রান্ত গেজেটও নিয়ে যান বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্যরা।

ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হলেও তা বিএনপির পক্ষ থেকে করা হয়নি বলে সাংবাদিকদের বলেন আবু হেনা। নিজে এখনও বিএনপিতে যুক্ত আছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

তাদের এই সাক্ষাতের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিএনপির কোনো প্রতিনিধির সিইসির সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো খবর তাদের জানা নেই।

নির্বাচন কমিশন

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির লাগাতার অবরোধ-হরতালের মধ্যে ডিসিসি নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

এই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বিএনপি বলে আসছিল, আন্দোলন থেক জনগণের দৃষ্টি ফেরাতেই ডিসিসি নির্বাচন করতে চাইছে সরকার

নেতা-কর্মীদের থেকে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে কার্যালয়ে খালেদার অবস্থান এবং শীর্ষনেতাদের অধিকাংশের কারাগারে কিংবা আত্মগোপনে থাকার মধ্যে আবু হেনা ও জামালের সক্রিয়তা দেখা গেল।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর কারাবন্দি খালেদাকে বাদ দিয়ে তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূইয়ার উদ্যোগে এম সাইফুর রহমান ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে আলাদাভাবে বিএনপির যে তৎপরতা চলেছিল, তাতে যুক্ত ছিলেন জামাল ও হেনা।

সংস্কারপন্থি এই নেতাদের অনেককে পরে দলে নিলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় বহিষ্কার করা হয়েছিল জামাল ও হেনাকে।

আবু হেনা

আবু হেনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি একসময় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলাম। ২০০৭ থেকে এখন বিএনপিতে আছি।”

ইসিতে এই আলোচনায় দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন না জানিয়েই তিনি বলেন, “ঢাকা সিটির নির্বাচনটা হওয়া উচিত। চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ওইভাবে প্রার্থী না দিলেও কাউকে না কাউকে সমর্থন দেবে।”

ইসিতে আবু হেনার সঙ্গে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ভোটার শহীদুল হক জামাল যাওয়ার পর ডিসিসি নির্বাচনে তার প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

প্রার্থী হচ্ছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি সরাসরি উত্তর এড়িয়ে বলেন, ‘সময়মতো’ জানানো হবে।

“নির্বাচন বিষয়ে কারও পক্ষ হয়ে নয়, আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে কি না, জানতে এসেছিলাম। সিইসি বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু হবে, যার ভোট সে দেবে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডিসিসি নির্বাচনের দল সমর্থিত প্রার্থী দেওয়া বা অন্য কোনো প্রার্থীকে সমর্থন জানানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে ডিসিসি উত্তরে ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক এবং ডিসিসি দক্ষিণে সাঈদ হোসেন খোকনকে মেয়র পদে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএনপি নেতা মাহবুবুর বলেন, “আমরা এখনও ওইভাবে সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের মনে করি, সংসদ নির্বাচনটাই আমাদের টপ প্রায়োরিটি।”

নির্বাচন হলে কাউকে না কাউকে বিএনপি থেকে সমর্থন জানানো হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই। দেখা যাক। সময় এলেই বোঝা যাবে।”

এইচএসসি পরীক্ষা ও রোজার আগে ১৫ জুনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ভোট করার পরিকল্পনার জন্যে সময় খুঁজছে নির্বাচন কমিশন। কিছু দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।