টানা এক মাস ধরে বিরোধী জোটের সহিংস অবরোধ চললেও জরুরি অবস্থা জারির সম্ভাবনা নাকচ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 04 Feb 2015, 04:44 PM
তিনি বুধবার সংসদে বলেছেন, “ইমারজেন্সি দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি কেউ সৃষ্টি করতে পারেনি।”
গত ৫ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ চালিয়ে যাওয়া বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ জোট নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচন অথবা সরকারের পতন পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এই কর্মসূচিতে প্রায় এক মাসে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই অগ্নিদগ্ধ হয়ে। মঙ্গলবারই কুমিল্লায় বাসে ছোড়া পেট্রোল বোমায় নিহত হয়েছেন সাতজন।
বিএনপি-জামায়াত জোট দেশকে অস্থিতিশীল করে অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতায় আনার পথ করতে চাইছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “ওই স্বপ্ন দেখে লাভ হবে না। অলীক-অলৌকিক স্বপ্ন যারা দেখছে, যারা দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চায়, আমাদের রক্ত থাকতে তা হতে দেব না।”
“একটা কথা বিএনপি ভুলে যায়...। কেউ কেউ ফোন করে। এই হয়ে যাচ্ছে। ইমারজেন্সি হয়ে যাচ্ছে। ইমারজেন্সি লাগবে কেন? আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে। কিভাবে এ ধরনের সন্ত্রাস দমন করতে হয়, আমরা জানি। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।”
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করলে ‘ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের’ বিধান যোগ করার কথাও এসময় তুলে ধরেন সরকার প্রধান।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে জরুরি অবস্থা জারির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, “ইয়াজউদ্দিন সাহেব ইমারজেন্সি দিতে পেরেছিলেন, কারণ তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানও সে এবং রাষ্ট্রপ্রধানও সে। এখন যদি ইমারজেন্সি দিতে হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীকে লিখে দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। তখন রাষ্ট্রপতি ইমারজেন্সি ডিক্লেয়ার দিতে পারবে।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা সুশাসন কায়েম করতে পারি, অবস্থা নিজেরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি, জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। এখানে ইমারজেন্সির দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি কেউ সৃষ্টি করতে পারেনি। জনগণকে সাথে নিয়েই আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারব।”
বিরোধী দলীয় প্রথধা হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, টক শোতে যারা ‘উসকানি’ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না?
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যারা টক শো করে, তাদের বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া কে দেবে? তাদের টার্গেট তো আমি।
“কিছু লোক আছে, গণতান্ত্রিক পন্থা তাদের ভালো লাগে না। অসাংবিধানিক পন্থা এলে তারা ভালো থাকে, তাদের গুরুত্ব বাড়ে। তারা ব্যস্ত থাকে অসাংবিধানিক পন্থা আনা যায় কি না।”