হরতাল-অবরোধ তুলে নিতে খালেদা জিয়াকে আর আহ্বান না জানিয়ে এবার নাশকতাকারীদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
Published : 04 Feb 2015, 03:37 PM
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গাড়িতে পেট্রোল বোমা মেরে সাতজনকে পুড়িয়ে হত্যার পর বুধবার ১৪ দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের সমন্বয়ক নাসিম এই ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার প্রতি আমরা আর কোনো আহ্বান জানাতে চাই না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলব, সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে। প্রয়োজনে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। কোনো শৈথিল্য দেখালে চলবে না।”
নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘সব’ পদক্ষেপে ১৪ দলের সমর্থন থাকবে বলে জানান নাসিম।
গত ৫ জানুয়ারি অবরোধ আহ্বানের পর এতে নাশকতায় মানুষের প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন ক্ষমতাসীন নেতারা।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার ভোররাতে চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোল বোমা হামলা হয়। তার আগে রংপুরে একইভাবে বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় পাঁচজন নিহত হন।
নাসিম বলেন, “মিঠাপুকুর ও চৌদ্দগ্রামের ঘটনা একই কায়দায় ঘটানো হয়েছে। তদন্ত করে দেখতে হবে, কারা কিভাবে এই ঘটনা ঘটাল।”
চৌদ্দগ্রামের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে যে মামলা করেছে, তাতে অবরোধ আহ্বানকারী খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ১৪ দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হবে কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে নাসিম বলেন, “এসব বিষয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে। আমরা তো বলছি।”
বিদেশিদের চক্রান্তে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “দেশে বিএনপি-জামায়াতের কোনো বন্ধু নেই, ওদের বন্ধু বিদেশে। বিদেশিদের চক্রান্তেই দেশ অস্থিতিশীল হচ্ছে।”
খালেদাকে ‘সন্ত্রাসের’ নেত্রী আখ্যায়িত করে নাসিম বলেন, “তিনি এখন আর জনগণের নেত্রী নন। তিনি জঙ্গিবাদের নেত্রী, সন্ত্রাসীদের নেত্রী। পত্রিকায় প্রকাশিত ফোনালাপই এর প্রমাণ।”
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে নাসিম কয়েকটি কর্মসূচির কথাও জানান।
১৪ দলের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকার সব সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময়, একই দিন বিকালে আলেম-ওলামা ও মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময়, ৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে শান্তি সমাবেশ, ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মানববন্ধন।
এছাড়া ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে শান্তি সমাবেশ করবে ১৪ দল।
এদিকে ১৪ দলের নেতাদের নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে সন্ত্রাসবিরোধী দিবস পালন করবে জাসদ, ১০ ফেব্রুয়ারি ওয়ার্কার্স পার্টি প্রতিবাদ সমাবেশ করবে ঢাকায়, সাম্যবাদী দল ঢাকায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ করবে।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বাসদ একাংশের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।