শোক নিয়ে রাজনীতি না করার অনুরোধ বিএনপির

আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর শোক নিয়ে কোনো পক্ষকে রাজনীতি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2015, 04:56 PM
Updated : 24 Jan 2015, 05:31 PM

শনিবার রাতে প্রধান ফটকে তালা পেয়ে প্রধানমন্ত্রী ফিরে যাওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই অনুরোধ জানান।

শিমুল বিশ্বাস দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে রওনা দেওয়ার আগেই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে এখানে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এপিএস শেখর সাহেব (সাইফুজ্জামান শেখর) যোগাযোগ করলে আমি তাকে বেগম জিয়ার অবস্থা জানিয়েছিলাম।”

“উনার অফিসের কেউ কেউ বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে গেইটে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, প্রধানমন্ত্রী ফেরত গেছেন- এরকম প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এই শোককে কেউ যদি ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে, এটা হবে দুঃখজনক।”

ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে খালেদা জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে শনিবার রাতে বিএনপি চেয়াপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ভেতর থেকে বন্ধ ফটক থেকেই তাকে ফিরে আসতে হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী ইকবাল সোবহান সাংবাদিকদের বলেন,  “তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবে, একজন দরদী মানুষ হিসেবে, একজন নেত্রী হিসেবে আরেকজন ছেলেহারা মাকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।

“কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় ফিরে গেছেন। আপনারা দেখেছেন, দরজাটি খোলা হয়নি। এটা অভদ্রজনোচিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়, অমানবিকও।”

ইকবাল সোবহানের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে শিমুল বিশ্বাস বলেন, “আমি সকল পক্ষকে অনুরোধ জানাব, এই শোক নিয়ে কেউ যেন কুৎসিত ও নোংরা রাজনীতি না করেন। শোককে নিয়ে কেউ রাজনীতি করতে আমরা তা চাই না।”

প্রধানমন্ত্রীর আসার পটভুমি ব্যাখ্যা করে তিনি দাবি করেন, “সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আসার ইচ্ছার কথা জানান। আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বেগম জিয়ার কক্ষে যাই। কিন্তু তার ছেলের মুত্যুতে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়লে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা ম্যাডামকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন।”

“আমি এই বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর এপিএসকে জানিয়েছিলাম। এরপর আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কোনো যোগাযোগ কেউ করেনি।”

শিমুল বিশ্বাস জানান, প্রধানমন্ত্রী গুলশানের কার্যালয়ের সামনে এসেছেন শুনে তিনি শোকবই নিয়ে দৌড়ে এসেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে প্রধানমন্ত্রী ফিরে গেছেন।

এদিকে গুলশানের কার্যালয়ে রাতে জাসদ সভাপতি আসম আবদুর রব, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ সিদ্দিকী প্রমুখ সমবেদনা জানাতে আসেন।

অবশ্য খালেদা জিয়াকে ঘুম পাড়িয়ে রাখায় তার সঙ্গে কেউই দেখা করতে পারেননি।