গয়েশ্বর ৩ দিনের রিমান্ডে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তারের পর সাংসদ ছবি বিশ্বাসকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2014, 10:35 AM
Updated : 31 Dec 2014, 08:37 AM

শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিল হোসেন শুক্রবার বিকালে এই বিএনপি নেতাকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন।

অন্যদিকে গয়েশ্বরের পক্ষে এর বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবীরা।

শুনানি শেষে মহানগর হাকিম তসরুজ্জামান জামিন নাকচ করে গয়েশ্বরকে তিন দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন পুলিশকে।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন পিপি সালমা হাই টুনি। আর আসামির পক্ষে সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা শুনানি করেন।

রাজধানীর বকশীবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ ও সাংসদের ওপর হামলার ঘটনার একদিন পর শুক্রবার ভোরে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে এই বিএনপি নেতাকে নিয়ে যায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,  সাংসদ ছবি বিশ্বাসের ওপর হামলার শাহবাগ থানার মামলায় গয়েশ্বরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বুধবার রাতে দায়ের করা ওই মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুল আওয়াল মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারি হেলালসহ ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের আসামি করা হলেও সেখানে গয়েশ্বরের নাম ছিল না।  

আর এমন এক সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় যখন গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠে খালেদা জিয়ার জনসভা নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি ঘোষণায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে উত্তেজনা চলছে।

রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা ও জামিন আবেদনের শুনানিতে এ বিষয়টিও তুলে ধরেন গয়েশ্বরের আইনজীবীরা।    

সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, “বুধবার মেডিকেলের সামনে যখন সাংসদের গাড়িতে হামলা হয় তখন গয়েশ্বর রায় বকশীবাজারে আদালত কক্ষে খালেদা জিয়ার পাশেই ছিলেন। গাজীপুরের জনসভা বানচাল করতে পরিকল্পিতভাবে এ মামলায় তার নাম ঢোকানো হয়েছে। ”

কারাগারে গয়েশ্বরের চিকিৎসার জন্যও আদালতেরকাছে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বুধবার বকশীবাজারে বিএনপি ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসের ওপর হামলা চালিয়ে তার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সাংসদ নিজে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এ ঘটনার জন্য বিএনপি ও ছাত্রদলকর্মীদের দায়ী করলেও বিএনপি তা অস্বীকার করেছে।

সংঘর্ষের পর বুধবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় সাংসদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়, যাতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়।

আর সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ চকবাজার থানায় আরেকটি মামলা করে, যাতে ৭০ জন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০/৪০ জনকে আসামি করা হয়।

সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ছাত্রলীগ কর্মীদের ছবি পরদিন বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলেও মামলায় সরকার সমর্থক এ ছাত্র সংগঠনের কেউ আসামি হয়নি।