নিষেধাজ্ঞা পরিকল্পিত: বিএনপি

খালেদা জিয়ার জনসভার দিন গাজীপুরে ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2014, 09:35 AM
Updated : 26 Dec 2014, 10:25 AM

গাজীপুর জেলা প্রশাসন শুক্রবার দুপুর থেকে জেলায় সব ধরনের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “শনিবার বেলা ২টায় গাজীপুরে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ দেওয়া কথা। এই জনসভা বানচাল করতেই সরকার পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।”

ফখরুল দাবি করেন, তারা জনসভার জন্য আগেই অনুমতি নিয়েছিলেন। সব নিয়ম মেনেই তা করা হয়েছিল।

“কিন্তু সরকার বিরোধী দলকে জনসভা করতে দেবে না। সেজন্য গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুরে স্থানীয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ যা কিছু করছে, তা সাজানো নাটকের বিভিন্ন পর্ব ছিল। সরকার শুধু ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠে নয়, গোটা গাজীপুরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।”

খালেদা জিয়ার বিভিন্ন জেলা সফরের অংশ হিসেবে বেশ কিছু দিন আগেই গাজীপুরের বদরে আলম কলেজ মাঠে জনসভার কথা জানিয়েছিল বিএনপি।

এরপর তারেক রহমানের এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ওই জনসভা ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে একই মাঠে পাল্টা কর্মসূচি দেয় ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার রাতে সেখানে বিএনপির লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন ভাংচুর করে তাতে আগুন দেওয়া হয়। মাঠ দখলে নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা বৃহস্পতিবার থেকেই সেখানে দফায় দফায় মিছিল করতে থাকে। মাঠের ভেতরে সামিয়ানা টাঙিয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ সমাবেশের ব্যানার ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়।

দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলেজ মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায় পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর দুপুরে ১৪৪ ধারা জারির কথা জানান জেলার পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ।

তিনি বলেন, “যেহেতু তারা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেন নাই, সেহেতু আমরা কাউকেই অ্যালাও করছি না।”

এর প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, “সরকার যে বিরোধী দলকে গণতন্ত্রের জন্য ন্যূনতম স্পেস দিতে চায় না, তার বড় প্রমাণ গাজীপুরের জনসভার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি। ঢাকায় আমাদের কোনো সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না। ঢাকার বাইরে আমরা যা একটু করতাম, সেক্ষেত্রেও বাধার সৃষ্টি করল।”

এই অবস্থায় বিএনপির পরবর্তী কর্মসূচি জানতে চাইলে দলের মুখপাত্র বলেন, দলের চেয়ারপারসনসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেই আমরা পরবর্তী করণীয় জানাব।

এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য মির্জা ফখরুল দুপুরের পর গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসায় যান বলে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা জানান।

জরুরি বৈঠক

গাজীপুরে সভা সমাবেশে নিষেজ্ঞা জারি হওয়ার পর করণীয় ঠিক করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের জরুরি বৈঠকে ডাকা হয়েছে।

দলের যুগ্ম মহাসচিব ও দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপাসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে।

বৈঠকের পর রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলন করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান তিনি।