বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।
Published : 28 Nov 2014, 04:31 PM
পাশাপাশি ‘অজুহাত’ দেখিয়ে টেলিভিশন সম্প্রচার বা কোনো সংবাদপত্র বন্ধ ঘোষণা করা হবে না বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি কনফারেন্স লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে ‘সাংবাদিকদের স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এরশাদ সরকারে প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন মওদুদ। পরবর্তীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে।
আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি বিচার বিভাগ, গণমাধ্যমসহ সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে বলে জানান বিএনপি সরকারের এই সাবেক মন্ত্রী।
প্রায় নয় মাস আগে নিজের একটি বইয়ে হাওয়া ভবনসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে দলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন মওদুদ। এরপর থেকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাননি তিনি।
নিজের নিশ্চুপ থাকা সম্পর্কে বক্তব্যের শুরুতে মওদুদ বলেন, “আমি অনেক দিন যাবত কথা বলার জন্য উৎসাহিত বোধ করছি না। কারণ দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। রাজনীতি নেই। আজ এখানে এসেছি, আলোচনার বিষয়বস্তুটি দেখে। স্বৈরাচারের বিষয়টি দেখে আমি দীর্ঘদিনের নীরবতার অবসান ঘটালাম।”
তিনি বলেন, “নব্বইয়ের স্বৈরাচারের সরকারের আমি যুক্ত ছিলাম। স্বৈরাচার সব সময় জনগণকে ভয় পায়। তারা মানুষের কণ্ঠ রোধ করে রাখে।”
সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, “সবাই বলে বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কি করবে- মানুষ জানতে চায়। আওয়ামী লীগের মতোই কি বিএনপি দেশ চালাবে? আমরা বলতে চাই, ২৫ বছর ধরে যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চলে আসছে, আমরা এর পরিবর্তন আনবো ।”
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে দলের ভবিষ্যৎ অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রথমেই জাতীয় সম্প্রচার নীতি বাতিল করবে। কোনো অজুহাতে টেলিভিশন সম্প্রচার ও কোনো সংবাদপত্র বন্ধ করা হবে না। কোনো অজুহাতে সাংবাদিককে কারাগারে নেওয়া হবে না।”
জাতীয় সংসদ, বিচার বিভাগ, কর্মকমিশন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আশ্বাসও দেন তিনি।
মওদুদ আহমদ বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গতানুগতিকের বাইরে ভিন্ন রকমের সরকার গঠন করবে। সংসদকে কার্য্কর করা হবে। বিরোধী দলের প্রতি সন্মান দেখানো হবে। পরমত সহিষ্ণুতার নীতি মেনে চলা হবে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি কমিশন, কর্মকমিশন যাতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠান স্বাধীন থাকলে গণতন্ত্র শক্তিশালী ও মজবুত হবে।”
বিএনপি নেতৃত্বাধীন বর্তমান আন্দোলন কর্মসূচিকে ‘গণতন্ত্র উদ্ধারের কর্মসূচি’ অভিহিত করে তিনি বলেন, “এবারের আন্দোলন আমাদের ক্ষমতা ফিরে পাবার জন্য নয়, হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য। এজন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া চাই।”
বিএফইউজের সহসভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদ, গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএফইউজে‘র মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবদুস শহিদ, বিএফইউজের নেতা নুরুল আমিন রোকন, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।