বহিষ্কারের পর ফের বিক্ষোভে ছাত্রদলের ‘বিদ্রোহীরা’

কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে শান্ত হলেও তিনজনকে বহিষ্কারের পর ফের রাজপথে নেমেছে ছাত্রদলের পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা, যারা বিদ্রোহী হিসেবে গণমাধ্যমে পরিচিতি পেয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2014, 02:04 PM
Updated : 11 Nov 2014, 02:07 PM

তিন নেতাকে বহিষ্কারের একদিন পর সে সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে দুই শতাধিক ছাত্রদল নেতা-কর্মী।

বহিষ্কৃত আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আবু সাঈদ ও গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজ এই সময় ওই কার্যালয়ের সামনেই ছিলেন। তারা তিনজন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখাও করেন।

এর আগে তাদের সমর্থনে মিছিলের ব্যানারে লেখা ছিল-  ‘খালেদা জিয়া এগিয়ে চল, আমরা আছি তোমার সাথে’, ‘নেতাদের বহিষ্কার মানি না, মানব না’, ‘আওয়ামী লীগের দালালরা হুঁশিয়ার, টুকু-এ্যানির পদত্যাগ চাই’।

বহিষ্কৃত আবু সাঈদ সাংবাদিকদের বলেন,  “আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে আমাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) ভুল বুঝিয়ে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আমাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।”

খোকন বলেন, “আমাদের ওপর অন্যায় করা হয়েছে। এই বহিষ্কার গঠনতন্ত্র অনুসারে হয়নি।”

টুকুর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন এবং আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের কমিটির সহসভাপতি আবু সাঈদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রদল।

বহিষ্কৃতদের বক্তব্যের বিষয়ে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, “দল যাদের বহিষ্কার করেছে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হয়েছে। এভাবে বহিষ্কারের বিধান গঠনতন্ত্রে রয়েছে।”

এই তিনজনকে বহিষ্কারের পাশাপাশি সাতজনকে নোটিস দিয়ে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার বিকালে তাদের বিএনপি কার্যালয়ে যেতে বলা হয়েছিল।

এরা হলেন- ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জাবেদ হাসান স্বাধীন ও তরুণ দে, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তরিকুল ইসলাম টিটু ও ফেরদৌস আহমেদ মুন্না এবং সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রয়েল, ঢাকার চকবাজার থানা শাখার সভাপতি নাহিদুল ইসলাম নাহিদ এবং চকবাজার থানা শাখার সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন বাবু।

এই সাতজন বিকালে কার্যালয়ে ঢুকে রিজভীর সঙ্গে দেখা করে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন।

রিজভী বলেন, “তারা জবাব দিয়েছে। এগুলো দলীয় হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।”

তবে অভিযুক্তদের জবাবপত্রে কী লেখা আছে, তা জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসান ও আকরামুল হাসানের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের পর থেকেই পদ না পাওয়ারা বিক্ষোভ শুরু করে।

বিক্ষোভের সময় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাংচুর চলে। কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জিয়াউর রহমানের ম্যুরালও নষ্ট করা হয়। বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি আপাত শান্ত হলেও স্থায়ী কোনও সমাধান আসেনি।

এরপর গত শুক্রবার খালেদা জিয়া শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিতে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতা শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর গাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায় ছাত্রদলের ‘পদবঞ্চিতরা’।

এরপরই তিনজনকে বহিষ্কার এবং সাতজনকে নোটিস পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।