আলাদা জোট গঠন করলেও নিজের নেতার স্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে ফেরার সম্ভাবনা নাকচ করেননি নবগঠিত ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু।
Published : 25 Sep 2014, 07:31 PM
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “তিনি (খালেদা) জিয়া ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না যাওয়াটা ভুল বলে স্বীকার করেন, আমাকে বহিষ্কার করার বিষয়ে অনুশোচনা করেন, তাহলে ফিরে যাব।”
এনপিপি চেয়ারম্যান নীলু প্রধানমন্ত্রীর ইফতার পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর তাকে ২০ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এরপর এনপিপির একটি অংশ নীলুকে বহিষ্কার করে ২০ দলে রয়েছে। অন্যদিকে ২০ দলে থাকাদের পাল্টা বহিষ্কার করে নীলু নতুন জোট গঠন করলেন, যাকে জোট ভাঙার সরকারি ষড়যন্ত্র বলছে বিএনপি।
নীলু বলেন, “বহিষ্কার করে তিনি (খালেদা জিয়া) বিষমিশ্রিত তীর আমার দিকে নিক্ষেপ করেছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আমার নেতা, আমার নেতার স্ত্রী তিনি। তাই ওই তীর আমার কাছে গোলাপের পাঁপড়ির মতো আমি মনে করছি।”
বহিষ্কারের প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে এনপিপি চেয়ারম্যান বলেন, “আমি বেরিয়ে যাইনি। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়ে জোটনেত্রী আমাকে বের করে দিলেন। এটা তিনি পারেন কি না, আমি তা জানতে চাই।”
২০ দলীয় জোট ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা ভুল বলে দাবি করেন তখন ওই জোটে থাকা এই নেতা।
“আমি নির্বাচনের পক্ষে ছিলাম। ওই জোটের এমন সব কাজ হয়েছে, যা স্ববিরোধী। যেমন জাতীয় নির্বাচনে আমরা যাইনি, আবার উপজেলা নির্বাচনে জোট অংশ নিল। এরকম শত শত ভুল ছিল।”
তবে তখন জোটে থাকলেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন নীলু।
গত বছর ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ না করার সমালোচনাও করেন তখন ২০ জোটে থাকা এই নেতা।
“ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিনি দেখা করলেন না। আবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হোটেল লবিতে ৪৫ মিনিট তিনি (খালেদা জিয়া) অপেক্ষা করেছিলেন। এটা কি স্ববিরোধিতা নয়?”
“ওই সময়ে আমি ২০দলীয় জোটের বৈঠকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, বিরোধী দল থেকে এম কে আনোয়ারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের নাম দিতে। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে সংসদের (নবম) একজন স্বতন্ত্র সদস্যের নাম বলেছিলাম। তা না হলে তোফায়েল আহমেদ অথবা শেখ সেলিমের নাম বলেছিলাম।”
খালেদা জিয়া নির্বাচন না গিয়ে এখন ‘গভীর হতাশায়’ রয়েছেন বলেও দাবি করেন এনপিপি চেয়ারম্যান।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচির সময় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নীলু।
“মির্জা ফখরুল সাহেব তখন কোথায় ছিলেন? কার কার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছেন? আমি নিজের মোবাইলে ৪০০ বার টেলিফোন করেছি, তাকে পাইনি। তাদের কারণে ওই দিন গুলশানের বাসার সামনে বেগম জিয়ার পাশে কাজের মেয়ে ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি।”
ফখরুলের সমালোচনা করে নীলু বলেন, “আমি মনে করি, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের ভারে ধানের শীষ তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ ওই দলের নজরুল ইসলাম খান, আবদুল্লাহ আল নোমানের মতো অনেক যোগ্য লোক আছে।”