রংপুরে এরশাদ সমর্থকদের সমাবেশে হামলা

মসিউর রহমান রাঙাকে দলের প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ দেওয়ার পর দুপক্ষের পাল্টাপাল্টির মধ্যে রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সমর্থকদের সমাবেশে হামলা হয়েছে। 

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2014, 10:11 AM
Updated : 20 Sept 2014, 10:11 AM

শনিবার দুপুরে নগরীর শাপলা চত্বরে এ হামলার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাপা সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙার সমর্থকদের দায়ী করা হচ্ছে। তবে, রাঙার সমর্থকরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

হামলায় আহতদের মধ্যে রয়েছেন জেলা জাপা আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন মাষ্টার, জেলা ছাত্রসমাজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা যুব সংহতির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হীরা।

এদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম ও মো. হীরাসহ পাঁচ জনকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর শাপলা চত্বর এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

গত ১০ সেপ্টেম্বর মসিউর রহমান রাঙাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সদস্য থেকে অব্যাহতি দেন এবং রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটি পুনর্গঠন করেন দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ।

এরশাদের গঠন করা জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি শনিবার সকাল ১১টায় পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সমাবেশ ও গণমিছিল করার ঘোষণা দেয় বুধবার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাঙা সমর্থকরা একই সময়ে ওই স্থানে সমাবেশ ডাকে।

এ কারণে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে শনিবার রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।

জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন মাষ্টার জানান, বেলা ১২টায় তারা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে সমাবেশ শুরু করেন। সমাবেশে জাতীয় পার্টির জেলা মহানগর নেতারা বক্তব্য শুরু করলে র‌্যাব অফিসের সামনের সড়ক থেকে সমাবেশ লক্ষ্য করে রাঙা সমর্থকরা পাঁচটি হাতবোমা ফাটায় ও ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। 

পরে তাদের নেতাকর্মীরা পাল্টা ধাওয়া করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।   

হাতবোমার স্প্লিন্টার ও ইটের আঘাতে তাদের ২০ নেতাকর্মী আহত হন বলেও তিনি জানান।

এরশাদের ভাতিজা জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ অভিযোগ করেন, “আমাদের সমাবেশ পণ্ড করার জন্যই স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী রাঙার নির্দেশেই তার সমর্থকরা হাতবোমা মেরেছে।”

কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর কাদের জিলানী বলেন, “সমাবেশ চলাকালে কে বা কারা ৫টি হাতবোমা ফাটিয়েছে এবং ইটপাটকেল মেরেছে। এতে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।” 

অভিযোগ অস্বীকার করে রাঙা সমর্থক দলের নেতা জেলা যুবসংহতির সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “তারা নিজেরাই হাতবোমা মেরে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীর ওপর দোষ চাপাতে চাচ্ছেন। আমরা দলীয় কার্যালয়ের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছি। তাদের সমাবেশে হামলা চালাব কেন?”

পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ১৪৪ ধারা জারি হলে এরশাদর সমর্থকরা শাপলা চত্বরে এবং রাঙা সমর্থকরা সেন্ট্রাল রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে শুরু করে।

জেলা প্রশাসক ফরিদ আহাম্মদ জানান, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।”

গত ১০ সেপ্টেম্বর এরশাদ আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে মোফাজ্জাল হোসেন মাষ্টারকে আহ্বায়ক ও হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফকে সদস্য সচিব করে রংপুর জেলা এবং মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে আহ্বায়ক ও এস এম ইয়াসিরকে সদস্য সচিব করে মহানগর জাতীয় পার্টির কমিটি গঠন করেন।

আগের কমিটিতে রাঙা একই সঙ্গে জেলা ও মহানগর সভাপতি ছিলেন।

এরপর ১১ সেপ্টেম্বর রাতে রাঙার সমর্থকরা নগরীতে শোডাউন করে জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয় দখলে নিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার রাঙা রংপুরের এলে তার সমর্থকরা তাকে ফুলেল সংবর্ধনা জানান।