চালের সঙ্কট নেই তো দাম বাড়ছে কেন: রিজভী

চালের ‘পর্যাপ্ত মজুদ’ আছে বলে মন্ত্রীরা দাবি করলেও বাজারে দাম বাড়ছে কেন, সেই প্রশ্ন সরকারের কাছে রেখেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2017, 01:03 PM
Updated : 19 Sept 2017, 01:03 PM

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা বলছেন, কোটি কোটি টন চালের মজুদ আছে। আমাদের প্রশ্ন- তাহলে চালের বাজারে অস্থিরতা কমছে না কেন?”

দুই দফা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি চালের মজুদ তলানিতে নেমে আসায় সরকার তিন মাস আগে আমদানির উদ্যোগ নেয়।

সরকারি-বেসরকারি পর্যায় মিলিয়ে গত আড়াই মাসে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হলেও বাজারে চালের দাম বাড়ছে, যার পেছনে মিল মালিকদের কারসাজিকে দায়ী করে আসছে সরকার।

সরকারি হিসেবেই মোটা চালের দাম গত এক মাসে বেড়েছে ১৮ শতাংশ, এক বছরে বেড়েছে ৫০ শতাংশ। এখন বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো মোটা চাল নেই।

রিজভী বলেন, “বর্তমানে চালের দাম সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। মোটা চালের দাম এখন ৫৫ টাকা এবং মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা পর্যন্ত।

“যে মজুদ থাকার কথা ছিল, তার অর্ধেকের কম চাল আছে কি না, সন্দেহ। ’৭৪ সালের ন্যায় ভয়াল দুর্ভিক্ষ চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে। এই জাতির অনাহার ও দুর্বিষহ অবস্থার যে বিষন্ন মেঘটি আমরা আকাশে দেখতে পাচ্ছি সেটা জন্য আমরা সবাই আতঙ্কিত।”

অভিযানের নামে চাল ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন বিএনপি নেতা।

পাশাপাশি তিনি বলেন, “মজুদদারি ও সিন্ডিকেট তো সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে। তারাই দীর্ঘ ৯ বছর যাবত সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করছে।”

রোহিঙ্গাদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তায় ফেরাতে হবে’

রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে সরকারকে জোরালো কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান রিজভী।

উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সার্বিক সহায়তা দিতে কক্সবাজারে বিএনপি একটি কন্ট্রোল রুম (নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) স্থাপন করেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সেখানে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা পর্যায়ক্রমে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলার নিন্দা

দুর্গাপূজার আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে মণ্ডপে হামলার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দায়ী করেন বিএনপি নেতা রিজভী।

তিনি বলেন, “বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রতিমা ভাঙার উৎসবে মেতে উঠেছে ক্ষমতাসীনরা। সাতক্ষীরা, নাটোর, মানিকগঞ্জ, যশোরে পূজামণ্ডপে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তা নজিরবিহীন। মানিকগঞ্জে ১৫টি ও নাটোরে ১৮টি পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নোংরা রাজনীতি।”

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসব যাতে আনন্দমুখর হয়, সেজন্য বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার আহ্বান জানান রিজভী।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলায় ৫ অক্টোবরের মধ্যে হাজির হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর হাকিমের আদেশ দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই নির্দেশ সরকারের একটা ঘৃন্য নীল-নকশার পরিকল্পনার অংশ।

“তার (খালেদা জিয়া) অনুপস্থিতিতে নিম্ন আদালত যে নির্দেশ দিয়েছেন এটি আমি মনে করি শেখ হাসিনার গোপন নির্দেশ। আমি এর তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ, ধিক্কার জানাচ্ছি।”

নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, আবদুল আউয়াল খান, আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।