মিথ্যাচারে সুলতানা কামাল, দাবি হাছান মাহমুদের

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সরকার অসত্য তথ্য দিচ্ছে বলে সুলতানা কামালের বক্তব্যের পাল্টায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2017, 02:45 PM
Updated : 20 April 2017, 02:45 PM

এই প্রকল্পে এক্সিম ব্যাংকের ঋণচুক্তির পর সুন্দরবন রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামালের সংবাদ সম্মেলনের পরদিন বৃহস্পতিবার এই প্রতিক্রিয়া জানায় ক্ষমতাসীন দলটি।

এক সংবাদ সম্মেলনে হাছান মাহমুদ বলেন, “পৃথিবীর সব ব্যাংকের টাকাই জনগণের টাকা। সেই টাকা ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে, একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে এক্সিম ব্যাংক এখানে বিনিয়োগ করছে। কিন্তু সুলতানা কামাল জনগণকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যাচার করছে।”

সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এটি সুন্দরবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেবে বলে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি, সুন্দরবন রক্ষা কমিটিসহ পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের অভিযোগ।

হাছান মাহমুদ (ফাইল ছবি)

এই বিরোধিতার মধ্যেও নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সরকার অসত্য তথ্য দিচ্ছে দাবি করে সুলতানা কামাল বুধবার বলেছিলেন, “আমরা এই প্রকল্পের দরপত্র বিশ্লেষণ করে দেখেছি, তারা (সরকার) যে কথাগুলো বলছে, সে সমস্ত যন্ত্রপাতি তারা কিনছে না। যাদেরকে ব্যবস্থাপনার ভার দেওয়া হয়েছে, তারা পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছে যে এ রকম প্রযুক্তি তারা জানে না ও বোঝেও না।

“অর্থাৎ সরকার বস্তুনিষ্ঠ কথা বলছে না। সরকার আমাদেরকে অসত্য তথ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রশ্নটা হচ্ছে সরকারের স্বার্থটা কোথায় এমন একগুয়েমি করার।”  

রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধীরা আবেগনির্ভর তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

“একটি মহল সরকারের যে কোনো কাজের মধ্যে কিন্তু খোঁজে। টিআইবির সাথে কিছু ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা পদ্মা সেতুতে সরকারের দুর্নীতি প্রমাণ করতে না পেরে সুন্দরবনের পাশে রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ করে আসছেন। তাদের সমস্ত অভিযোগ অনুমাননির্ভর, আবেগনির্ভর ও জ্যোতিষ বিদ্যানির্ভর।”

সুলতানা কামালের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানও ছিলেন।

সাবেক পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতাকারীদের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে দৃষ্টি দিতে পরামর্শ দেন।

“বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশে এলাকায় ফসলের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফসল আরও বেড়েছে।”

রামপালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে বলে পরিবেশের ক্ষতির কোনো সম্ভাবনাই নেই বলে দাবি করেন হাছান মাহমুদ।

বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রকল্প সরিয়ে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তারা তো ভাড়াটে বিশেষজ্ঞ দিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন করে মূলত দেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার বিষয়টি তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, “দেশের ক্ষতি হবে এমন কোনো প্রকল্প তিনি বাস্তবায়ন করবেন না। তিনি এটাও ব্যাখ্যা করেছেন এখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কোনো ক্ষতি হবে না। তাই অন্য কোথাও সরানোর কথা অবান্তর।”

ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, উপ-দপ্তর বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি উপস্থিত ছিলেন।