বিএনপি ভারতকে গ্যাস দেয়নি: নজরুল

ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল- প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির নেতা নজরুল ইসলাম খান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2017, 12:20 PM
Updated : 12 March 2017, 12:20 PM

রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “আমরা না কি গ্যাস দেওয়ার চুক্তি করতে ক্ষমতায় এসেছিলাম। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী তো দেয় যে, বিএনপি ভারতকে গ্যাস দেয় নাই।”

“তাহলে কী গ্যাস দেয় নাই বলে এরপরে ক্ষমতায় আসতে পারল না? আওয়ামী লীগের যুক্তি মানলে তো তা-ই মানতে হয়।”

নজরুল ইবলেন, “২০০১ সালে বিএনপি জনগণের বিপুলভোটে ক্ষমতায় এসেছিল, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অপশাসনে অতিষ্ঠ জনগণের স্বতস্ফূর্ত সমর্থনে।”

রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১১তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিশন মিলনায়তনে যুব মহিলা লীগের জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়াই ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই কথা বলছেন বিএনপির নেতারা। তাদের দাবি, সফরে যেসব চুক্তি হবে তা যেন প্রকাশ্যে আনা হয়।

শেখ হাসিনা ওই অনুষ্ঠানে বলেন, “আজকে শুনি, খুব ভারতবিরোধী কথা! আমার প্রশ্ন ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে যখন আমেরিকান কোম্পানি আমাদের গ্যাস বিক্রি করতে চাইল ভারতের কাছে, ভারত গ্যাস কিনবে। ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা কে দিয়েছিল? এই খালেদা জিয়াই তো মুচলেকা দিয়েছিল.. দিয়েই তো ক্ষমতায় এসেছিল। আমি তো দেইনি।”

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি বলেছেন, হাওয়া ভবন যেখানে তারেক রহমান সাহেব বসতেন, সেখানে না কী ‘র’ এর এজেন্ট গিয়ে বসে থাকত, ইউএস অ্যাম্বেসির লোকেরা গিয়ে বসে থাকত। কী ছিলেন তারেক রহমান? কিছুই ছিলেন না বিএনপির। তখন বিএনপি বিরোধী দলে। কারণ ২০০১ এর ক্ষমতায় আসার আগের যদি ঘটনা এটা হয়, তখন বিএনপি বিরোধী দলে ছিলেন।”

দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে নজরুল ইসলাম খান নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো নির্বাচনী কর্মকর্তা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে না, এই ধরনের সরকার দায়িত্বে থাকলে নির্ভয়ে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না, ভোট দিতে পারবে না। জনগণ যাকে ভোট দেবে সে যে নির্বাচিত হবে- তার কোনো গ্যারান্টি নাই।

“সেই কারণে আমরা চাই, নির্বাচনের সময়ে এমন একটি সহায়ক সরকার, যে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে। এই দাবি জনগণের দাবি, এই দাবি ন্যায্য দাবি, এই দাবির পক্ষে আন্দোলন জোরদার করতে হবে।”

সংগঠনের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ফিরোজের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য শওকত মাহমুদ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।