খালেদা জিয়া চাইলেও নির্বাচন ঘিরে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে নন বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম পরামর্শক এমাজউদ্দীন আহমদ।
Published : 22 Nov 2016, 11:36 PM
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলের মতৈক্যের কথা বলে খালেদা জিয়ার জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাওয়ায়ও আপত্তি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক।
টেলিভিশন স্টেশন এটিএননিউজের একটি টক শোতে ‘যদি বিএনপি গণতান্ত্রিকভাবে এগিয়ে আসতে চায় তাহলে জামায়াতকে পরিত্যাগ করা উচিত বলে মনে করেন কি না’ প্রশ্নের মুখোমুখি হন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ‘শত নাগরিক কমিটি’র প্রধান এমাজউদ্দীন।
জবাবে তিনি বলেন, “ইয়েস, মনে করি...এবং এটা আমি স্পষ্টভাবে বলেছিও। সমাজ হিসেবে বাংলাদেশের বয়স হল প্রায় চার থেকে সাড়ে চার হাজার বছর। আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্রের বয়স এখনও ৫০ বছর পুরোনো হয়নি। এই দীর্ঘকালীন পরিসরে সব থেকে বড় অর্জন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। এই মুক্তিযুদ্ধে যারা বাধা দিয়েছে, আই হেইট টু কিপ দেম বিসাইড মি-সোজা কথা।”
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির চেয়ারপারসন গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে ইসি নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের রূপরেখা এবং ‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ১৩টি প্রস্তাব দেন।
আরপিও’র ধারা সংশোধন করে ‘ল এনফোর্সিং এজেন্সি’ হিসেবে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ‘ডিফেন্স সার্ভিস অব বাংলাদেশ’ পুনঃস্থাপনের দাবি করেন তিনি।
পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সময়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ারও প্রস্তাব এসেছে জেনারেল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছ থেকে।
নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণে তিনি যেসব প্রস্তাব দিয়েছেন তার একটি- “বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন সময়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ম্যাজিস্টেরিয়াল ক্ষমতা প্রদান করে সকল নির্বাচনী এলাকায় টহলসহ ভোট কেন্দ্রে ও বিশেষ বিশেষ স্থানে মোতায়েনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই ব্যবস্থা ভোট গ্রহণ দিবসের ৭ (সাত) দিন পূর্ব হতে নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশনা পর্যন্ত স্থায়ী হবে।”
টকশোতে এই প্রসঙ্গ এলে অপর আলোচক ব্যারিস্টার রফিক উল হকের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন বিএনপিপন্থি পেশাজীবীদের নেতা এমাজউদ্দীন।
ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেন, “সশস্ত্র বাহিনীকে বেসামরিক প্রশাসনে যুক্ত করার যৌক্তিকতা নেই।”
তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এমাজউদ্দীন বলেন, “এটা কী বলব? এটা হয়ত লিখিতভাবে হয়েছে। আমি যদি আপনাদের সামনে ১৯৯১ এর নির্বাচনের কথা বলি, ১৯৯৬ এর নির্বাচনের কথা বলি, এমনকি ২০০১ বা ২০০৮ এর নির্বাচনের কথা বলি – এই চারটি নির্বাচন প্রত্যেকটিতে বেশ কিছু ব্যক্তি কাজ করেছিল, কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার তাদের ছিল না।”
তবে নির্বাচন কমিশন মনে করলে নিরাপত্তার প্রয়োজনে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“যদি সামরিক বাহিনীর কিছু লোক যারা আপনার কাছাকাছি থাকেন, যাতে ভোটাররা তাদের ইচ্ছেমত ভোট দিতে পারেন। এবং সময়মত ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, ভোটের বাক্সটা যেন সংরক্ষিত রাখতে পারেন সেজন্য সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি প্রয়োজন, যদি নির্বাচন কমিশন মনে করেন– ডেফিনেটলি দে ক্যান ইনভাইট।”