সার্চ কমিটি না করে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন(ইসি)গঠনের দাবি আবার জানিয়েছেন বিএনপির দুই জ্যেষ্ঠ নেতা।
Published : 26 Sep 2016, 09:25 PM
সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ দুটি আলোচনা সভায় সরকারের কাছে এই দাবি তুলে ধরেন।
নয়া পল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা জেলার নতুন কমিটির প্রথম সভায় গয়েশ্বর বলেন, “সার্চ কমিটি যিনি গঠন করবেন, তিনি আওয়ামী লীগের; যাকে দিয়ে গঠন করবেন, তিনিও আওয়ামী লীগের; যারা সার্চ কমিটি থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, তারাও আওয়ামী লীগের। তারা কোনো নিরপেক্ষ ও সাহসী ব্যক্তিকে নির্বাচন কমিশন করবেন না।
“সেজন্য আমি বলব, ইতোপূর্বে যেসব রাজনৈতিকদল সংসদে ছিল তাদের মতামত, যারা সরকারে ছিল তাদের মতামত- এসবের থেকে তালিকা নিয়ে যদি একটি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করা হয়, সেক্ষেত্রে আস্থা আসতে পারে।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবেজাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় হাফিজ বলেন, “আওয়ামী লীগের সরকারের অধীনে যে সার্চ কমিটি হবে, তাদের রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে যে নির্বাচন কমিশন উপহার দেবেন, সেটি রকিবউদ্দীন কমিশনের মতোই একটি কমিশন হবে। সুতরাং আমরা কেউ এদের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করি না।
“তবুও এদেশকে রক্ষা করার জন্য আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন জানাবো- অতীতে যেসব রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, অতীতে যেসব রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে, তাদের মতামত নিয়ে একটি সার্চ কমিটি করা হোক।”
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে।
পাঁচ সদস্যের নতুন কমিশন নিয়োগে আগের বারের এবারও ‘সার্চ কমিটি’করা হচ্ছে বলে ইতোমধ্যে আভাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গতবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ‘সার্চ কমিটি’র মাধ্যমে কাজী রকিবউদ্দীন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।
এই কমিশনকে সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’বলে আসছে বিএনপি। গত সাধারণ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সন্দেহ, একই ধরনের আরেকটি ইসি গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।
গয়েশ্বর বলেন, “ঘুরে ফিরে দেখা যাবে, সবই কিন্তু ওই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির থেকে আরও নিকৃষ্টতম আরেকটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের মেয়াদ আরো বৃদ্ধি করার একটি মহাৎসব চলছে।”
তিনি জানান, আগামী নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে শিগগিরই নীতিনির্ধারকরা বসে দলের অবস্থান স্পষ্ট করবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আলোচনা সভায় হাফিজ বলেন, “ধ্বংসের মুখ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, জঙ্গিবাদের ভয়াল থাবা থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করার জন্য অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক।”
সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার পদক প্রত্যাহার করে নেওয়ার সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করেন বীর বিক্রম খেতাবধারী এই মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে গণস্বাস্থের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, আবুল হোসেন, লেবু গাজী বক্তব্য রাখেন।