জঙ্গি নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে ‘কূটতর্ক’ বললেন ইনু

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে জঙ্গিদের জীবিত ধরতে না পারার বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বক্তব্যেকে ‘কূটতর্ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2016, 07:29 PM
Updated : 29 August 2016, 07:30 PM

সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সাম্প্রদায়িকতার বোমাকে নিষ্ক্রিয় করতে হলে এই মুহূর্তের আপদ এবং উৎপাত জঙ্গি সন্ত্রাসীদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে হবে।

“সুতরাং জঙ্গি সন্ত্রাসীদের গুলি বুকে লাগল, না মাথায় লাগল, পায়ে লাগল না পেটে লাগল- এই নিয়ে যারা কুটতর্ক করেন, তাদের উদ্দেশে আমি শুধু বলব, জঙ্গি সন্ত্রাসীরা কি ধর পড়ছে, জঙ্গি সন্ত্রাসীরা কি ধ্বংস হচ্ছে? যদি ধ্বংস হয়, তাহলে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান, জনগণকে ধন্যবাদ জানান।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে স্পেশাল সেমিনার হলে দুই দিনব্যাপী এক সেমিনারের সমাপনী পর্বের বক্তৃতায় এব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

ভারতের মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ (এমএকেএআইএএস) ও ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট কালেক্টভির (আরডিসি) যৌথ উদ্যোগে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় ধর্ম নিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও জেন্ডার সমতা’ শীর্ষক এই সেমিনার হয়।

জঙ্গিবিরোধী অভিযানকে ‘যুদ্ধ’ আখ্যায়িত করে তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, “যুদ্ধে ক্ষেত্রে যুদ্ধের নিয়মেই যুদ্ধ করতে হবে। আর সেটা হচ্ছে শত্রুকে ধ্বংস করতে হবে।

“যদি আত্নসমপর্ণ করে তাহলে কারাগারে দেবে, কিছু হবে না। কিন্তু যুদ্ধের ভেতরে যুদ্ধের নিয়মে খেলতে হয়। যুদ্ধ ক্ষেত্রে জনগণের বন্ধুত্বের দ্বারা শত্রুকে ধ্বংস করতে হয়। এর বাহিরে কোনো নিয়ম নাই কিন্তু।”

জঙ্গিদের দমনের সময়ে যারা তাদের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ দেখাচ্ছেন তারা জঙ্গি বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন জাসদ একাংশের নেতা ইনু।

“জঙ্গিদের দমনে যারা মানবাধিকার নিয়ে হাউ হাউ করছেন, যারা জঙ্গির পরিচয় নিয়ে দুচিন্তা করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলবো- আপনি মন ঠিক করেন, আপনি কোন পক্ষে খেলছেন। কূটপ্রশ্ন করে জঙ্গিদের বাঁচানোর চেষ্টা করবেন না।”

দারিদ্র্য, সাম্প্রদায়িকতা ও আণবিক অস্ত্র- এই তিনটি উপমহাদেশের জন্য ক্রমেই বিপদজ্জনক হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।

“এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিধানের জন্য দৌড়াচ্ছে, সেই দৌড়ে তারা সমরাস্ত্র সংগ্রহ করেছে। একদিকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, কিন্তু অপরদিকে অনেক বছর ধরে এই দক্ষিণ এশিয়াতে তিনটি বিপদজ্জনক বোমা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। দারিদ্র্য বোমা, সাম্প্রদায়িক বোমা ও আণবিক বোমা।

“আমরা যারা রাজনীতি করছি, পড়াশুনা, রাজনীতি করছি- আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই তিনটি বোমা নিষ্ক্রিয়া করা।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপম নাসরীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, নয়া দিল্লীর পরিকল্পনা ও প্রশাসন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ ইরফান হাবিব ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার অধ্যাপক রিজওয়ান কায়সার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারকাত ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল।