২১ অগাস্টের আগে তারেকের শ্বশুরবাড়ি থাকা নিয়ে প্রশ্ন হাসিনার

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার আগে তারেক রহমান ‘৮ থেকে ১০ মাস শ্বশুরবাড়িতে’ ছিলেন জানিয়ে তার কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2016, 05:41 PM
Updated : 21 August 2016, 05:41 PM

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণ শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার।

শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ওই হামলা চালানো হয় বলে পরে একটি তদন্তে বেরিয়ে আসে।

এই হামলা পরিকল্পনার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

কয়েক দফায় তদন্তের পর যে অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে মামলার বিচার কাজ চলছে, তাতে আসামি তারেক রহমানও। আসামিদের মধ্যে চার দলীয় জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরও রয়েছেন।

ভয়াল এই হামলার ১২ বছর পূর্তিতে রোববার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে এক সভায় শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপি নেত্রীর বড় ছেলের শ্বশুর বাড়ি ধানমন্ডির ৫ নম্বরে। এই ঘটনার আগে প্রায় আট থেকে দশ মাস একটানা ওই শ্বশুড় বাড়িতে সে ছিল। কেন ছিল?

তারেক রহমান

“ষড়যন্ত্রগুলো ওখানে বসে করতে সুবিধা, তাই? ঠিক পহেলা অগাস্ট সে ক্যান্টনমেন্টের বাসায় ফেরতে চলে যায়।” 

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেও গণভবনে না থেকে ঢাকা সেনানিবাসে মঈনুল হোসেন সড়কের বাসায় থাকতেন সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের স্ত্রী  খালেদা জিয়া। তারেকও পরিবার নিয়ে মায়ের সঙ্গেই থাকতেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “তাদের (বিএনপি) এমপি ও খালেদা জিয়ার বক্তব্যে এটা স্পষ্ট ছিল, আমাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবে চিরতরে।”

২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার কিছুদিন আগে এক বক্তৃতায় খালেদা জিয়া বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়া তো দূরের কথা,বিরোধীদলের নেতাও কোনোদিন হতে পারবেন না শেখ হাসিনা। 

তার এই বক্তব্য নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এই বক্তৃতার সূত্র ধরে যদি ২১ অগাস্টের ঘটনা দেখি, তাহলে কী দাঁড়ায়?”

সে সময় ওই হামলার কোনো আলামত সংগ্রহ করা হয়নি জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “এটা কীভাবে সম্ভব?”

ওই দিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “যে মুহূর্তে আমি আমার বক্তব্য শেষ করে ‘জয় বাংলা’ বলে হাতের মাইকটা টেবিলে রেখেছি, তখনই সেই গ্রেনেড হামলা শুরু হল। একটার পর একটা গ্রেনেড মারা হচ্ছে। প্রথম তিনটা গ্রেনেড মারার পরে কয়েক সেকেন্ড সময়, এরপর আবার একটার পর একটা গ্রেনেড।

“জানি না আমার কী ভাগ্য! গ্রেনেড ট্রাকের ভিতরেই পড়ার কথা। কিন্তু সেখানে না পড়ে ডালায় লেগে পাশে পড়ে যায়।”

সে সময় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফসহ শেখ হাসিনার নিরাপত্তাকর্মীরা মানববর্ম তৈরি করে তাকে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার থেকে রক্ষা করেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, “একটার পর একটা গ্রেনেড মেরেছে। ১৩টা গ্রেনেড তারা ছুড়েছিল, মনে হচ্ছিল ‘কেয়ামত’ এসে গেছে। আমার চোখের চশমা ছিটকে পড়ে যায়। দূরে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। ওই অবস্থায় আমার সাথে নিরাপত্তায় যারা ছিল, তারা যখন পাল্টা গুলি ছুড়ল তখনই ওটা থামল।

“আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে র‌্যালি করতে গিয়ে নিজেরাই সন্ত্রাসের শিকার হলাম।”