বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “হাই কোর্টের এই সাজা ন্যায় বিচারের পরিপন্থি। হাই কোর্ট একতরফাভাবে এই বিচার করেছেন। সেখানে তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আইনজীবী বক্তব্য রাখতে পারেন নাই।”
“ইনশাল্লাহ যখন সময় আসবে, তারেক রহমান এই মাটিতে আসতে পারবেন। আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল করব। আপিল করে আমরা দেখাতে পারব, এই মামলা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে হয়েছিল।”
ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে করা এ মামলায় জজ আদালত ২০১৩ সালে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেককে খালাস এবং তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের রায়ে হাই কোর্ট বৃহস্পতিবার মামুনের সাজা বহাল রেখে তারেকের খালাসের রায় বাতিল করেছে। খালেদা জিয়ার ছেলে তারককে সাত বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে করা হয়েছে ২০ কোটি টাকা জরিমানা।
ওই রায়ের পর বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে খালেদা জিয়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। এরপর শুক্রবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন খন্দকার মাহবুব।
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই মামলায় একদিন সুবিচার হবে, দেশের মানুষ জানতে পারবে যে তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য সরকার সাজা দিয়েছিল।”
আপিল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খন্দকার মাহবুব বলেন, “আইনের বিধান অনুযায়ী যে পর্যন্ত না তারেক রহমান সাহেব বাংলাদেশে আসেন এবং এখানে হাজির হন, সেই পর্যন্ত তার পক্ষে আপিল করা সম্ভব না।”
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ওই মুদ্রা পাচার মামলা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ দাবি করে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, “বাংলাদেশ থেকে একটি পয়সাও বিদেশে যায়নি। খাদিজা ইসলামের বক্তব্য সরাসরি সরকার গ্রহণ করেছে এবং আদালতও সেটা গ্রহণ করেছে। সেখানে তারেক রহমানের নাম গন্ধ নাই।”
বিএনপির ‘আগামী দিনের সেনাপতি’ তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই সরকার মামলাটি দায়ের করে বলে অভিযোগ এই বিএনপি নেতার।
সরকারের উদ্দেশে খন্দকার মাহবুব বলেন, “এখনো সময় আছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য আদালতের শরাণাপন্ন না হয়ে রাজপথে আসুন, রাজপথে ফয়সালা করুন।
“আর মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ তৈরি করে পেছনের দরজা দিয়ে যদি সাজা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তার পরিণতিতে দেশের আইনের শাসন ধ্বংস হয়ে যাবে, বিচার ব্যবস্থার ওপরে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আসম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহসভাপতি চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবীর খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, নুরী আরা সাফা, আনোয়ার হোসেইন, শাহ আবু জাফর, বিলকিস জাহান শিরিন, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।