খনি দুর্নীতি: মামলা স্থগিত চেয়ে খালেদার লিভ টু আপিল

বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যাতে নিম্ন আদালতে বিচারাধীন এ মামলার কার্যক্রম স্থগিতেরও আরজি জানানো হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2016, 09:13 AM
Updated : 26 June 2016, 09:13 AM

খালেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন রোববার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি জমা দেন।

পরে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লিভ টু আপিলে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আরজি জানানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী  আবেদনটি শুনানির জন্য চেম্বার বিচারপতির আদালতে দাখিল করা হবে।”

খনি দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর হাই কোর্ট খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি মামলার কার্যক্রমে আগের স্থগিতাদেশও তুলে নেওয়া হয়।

সে অনুযায়ী, মামলার ১১ আসামির মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নয়জনকে আগামী ২৪ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে রেখেছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। ওই আদালতেই মামলাটি অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।

হাই কোর্টের রায়ের অনুলিপি ২৫ মে হাতে পাওয়ার কথা জানিয়ে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০০৮ সালের ১ জুন এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বলা হয়, অপরাধ সংঘঠিত হয়নি। দুদক আইন অনুসারে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেওয়ার পর নতুন করে তদন্তের সুযোগ না থাকলেও ২০০৮ সালের ৫ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক মো. শামসুল আলম ফের তদন্ত করে অভিযোগপত্র দেন।”

এসব যুক্তিতে লিভ টু আপিলেও মামলা বাতিলের আরজি জানানো হয়েছে বলে খালেদার আইনজীবী জানান।

মামলার বৃত্তান্ত

বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় অভিযোগপত্রে।

খালেদা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার।

সাত বছর পর গত বছরের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাই কোর্টের দেওয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে গত বছরের ৩০ আগস্ট আদালত বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখে। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর হাই কোর্ট রায় দেয়। 

এই দুর্নীতি মামলা নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের করা দুটি আবেদন আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে গেছে। এই দুই জামায়াত নেতাই সে সময় খালেদার সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইতোমধ্যে তাদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।