খালেদাকে গ্রেপ্তার হবে ‘আগুন নিয়ে খেলা’: মোশাররফ 

দুর্নীতির মামলায় বিচারকের আদেশ অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হলে তা আগুন নিয়ে খেলার শামিল হবে বলে সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2016, 11:21 AM
Updated : 28 May 2016, 11:21 AM

শনিবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই হুঁশিয়ারি দেন।

“আমরা শুনতে পাই, বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমায় আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিয়ে তারা (সরকার) আটক করতে চায়। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

“সরকারকে বলতে চাই, আপনারা এদিকে পা বাড়াবেন না, এই ভুল করবেন না। আপনারা আগুন নিয়ে খেলা করবেন না।”

 বাংলাদেশকে ‘মডারেট’ অভিহিত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “এদেশের মানুষকে আহত করে আপনারা বেশি দূর এগুতে পারবে না। অতএব গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন, আমরা সকলে মিলে দেশকে অগ্রসর করি।”

গত ১৯ মে ঢাকা তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ২ জুন আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, সেদিন অনুপস্থিত থাকলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে।

খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় ১৯ মে মামলায় তার আত্মপক্ষ সমর্থন পঞ্চম দফায় পিছিয়ে যায়।

খালেদার অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তার অন্যতম আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সেদিন আবারও সময়ের আবেদন করেন। ওই আবেদন ‍শুনে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়ে ওইদিন খালেদাকে হাজির হতে নির্দেশ দেন। 

জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় সম্মেলনের কক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিএনপি নিয়ে এই সরকার কীভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের নেতা জিয়াউর রহমানকে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছে। সেই সময় থেকে ষড়যন্ত্র আজো চলছে, এই দলকে ধ্বংস করার জন্য।

“বিএনপিকে বিভক্ত করার নানা চেষ্টা হয়েছে। হুসেইন মো. এরশাদ এই বিএনপিকে সম্পূর্ণভাবে নিহ্নিত করে দেওয়ার জন্য হুদা-মতিনের (শামসুল হুদা চৌধুরী-ডা এম এ মতিন) বিএনপি সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এই দলকে ধ্বংস করতে পারেনি। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই বিএনপি ঘুরে দাঁড়িয়ে তিন-তিনবার ক্ষমতায় গেছে।”

বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গণমাধ্যমে ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করে নেতা-কর্মী ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য।

“২২ মাস কারাভোগের পর আমি মুক্তি পাওয়ার পর একটি পত্রিকায় অপপ্রচার করলো, আমি নাকি সমঝোতা করে বেরিয়েছি বিএনপিকে ভাঙার জন্য। সমঝোতা করতে হলে ২২ মাস কারাগারে থাকতে হবে কেন? গ্রেপ্তারই হতাম না।

“আরেকটি পত্রিকায় লিখেছে- কিছুদিন আগে নাকি আমরা স্থায়ী কমিটির কিছু সদস্য গোপনে মিটিং করেছি। তাদের কাছে নাকি ভিডিও ফুটেজ আছে, আমরা বিএনপিকে ভাঙার ষড়যন্ত্র করছি।”

লায়লা বেগমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, কেন্দ্রীয় নেত্রী রেহানা আখতার রানু, সামিয়া চৌধুরী, রাশেদা বেগম হীরা, ফরিদা ইয়াসমীন, লায়লা ইয়াসমীন ও রোকসানা খানম মিতু বক্তব্য রাখেন।