মে দিবসে ‘স্মরণকালের সবচেয়ে বড়’ সমাবেশের আশা বিএনপির

নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে পহেলা মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শ্রমিক সমাবেশে ‘স্মরণকালের সবচেয়ে বড়’ জনসমাগম ঘটানোর আশা করছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2016, 09:16 AM
Updated : 27 April 2016, 09:16 AM

বুধবার ঢাকা মহানগর বিএনপির এক যৌথ সভায় দলের মহানগর আহবায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, “এ জনসভাকে শ্রমিক দলের সমাবেশ ভাবলে চলবে না। আমাদের ভাবতে হবে- এটি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জনসভা।”

মে দিবসের দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার।

সকল থানা-ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, “এ যাবতকালে দেশনেত্রীর জনসভায় যতো লোক হয়েছে, তার চাইতে বেশি লোক সমাগম, কর্মী সমাবেশ ঘটিয়ে সরকারকে আমরা বুঝিয়ে দেব- স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা আমরা করতে পেরেছি।”

দশম জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি দুই দফা সরকারবিরোধী আন্দোলনে গিয়েও সাফল্য পায়নি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভরাডুবির পর সংগঠন গোছানোর প্রত্যাশা নিয়ে গত ১৯ মার্চ ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন করেছে খালেদার দল।  

ঢাকার ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে ওই সম্মেলনে অংশ নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর মে দিবসের অনুষ্ঠানই হবে তার প্রথম জনসভা। 

এর আগে খালেদার সর্বশেষ জনসভা হয়েছিল গত ৫ জানুয়ারি, নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে। পৌর নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির পর বিএনপি চেয়ারপারসন ওই জনসভায় আসেন।

আর সোহরাওয়ার্দীতে খালেদার সর্বশেষ সমাবেশ হয় ২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি। তার মাত্র ১৫ দিন আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

শ্রমিক দিবসের সমাবেশ সামনে রেখে বুধবার নয়া পল্টনে মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে যৌথ সভা হয়।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ সমাবেশকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অভিহিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আজ দেশের সকল মানুষ নির্যাতিত-নিপীড়িত। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার, ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত। সারা দেশে হত্যা-গুম-নির্যাতন এমন এক পর্য়ায়ে পৌঁছেছে যে, এখানে মানুষের কোনো অধিকার নেই।”

তিনি বলেন, জনগণ ও শ্রমিকের অধিকার ‘ফিরিয়ে আনতে হলে’ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সদ্য কারামুক্ত মির্জা আব্বাস বলেন, “বরাবরই দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটে। তবে এবার ব্যতিক্রম। আমরা এখন রাস্তায় মিছিল করতে পারি না। ঢাকার রাজপথে একটা মাত্র দল মিছিল করতে পারে।... এটা কেমন গণতন্ত্র হলো?”

আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের ওপর যে জনগণের ‘আস্থা নেই’, তা ‘প্রমাণ হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

স্থানীয় সরকারের সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে জালিয়াতির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “সিল মেরে তাদের জিততে হবে সারা জীবন, যতদিন তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়।... তা হলে কী করতে হবে? বিএনপিকে আগে চাপিয়ে রাখতে হবে, ধবংস করতে হবে।

“আমি স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই- বিএনপি ধ্বংস হওয়ার দল নয়।”

দলের মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আউয়াল মিন্টুও যৌথসভায় বক্তব্য দেন।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর নেতা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কাজী আবুল বাশার, শামসুল হুদা, ইউনুস মৃধাসহ বিভিন্ন থানার নেতারা এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।