ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট প্রথম দুই ধাপের তুলনায় শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিউদ্দীন আহমদ।
Published : 23 Apr 2016, 08:23 PM
শনিবার তৃতীয় ধাপে দেশের ৪৮ জেলার ৬১৪টি ইউপির ভোট হয়। অনিয়ম ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত হওয়ায় ২৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়।
নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ তুলে বিএনপি বলেছে, সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাস দেওয়া নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবারও ‘সাক্ষী গোপালের’ ভূমিকা পালন করেছে।
বিএনপির এ অভিযোগে পর সন্ধ্যায় ইসির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, “তৃতীয় ধাপের ভোটে কিছু অনিয়ম ও সহিংসতা বিচ্ছিন্নভাবে ঘটলেও তা আগের তুলনায় কম। বড় ধরনের জানমালের ক্ষতি ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।”
আগের দুই ধাপের ‘অভিজ্ঞতা ও সতর্কতার’ কারণে তৃতীয় ধাপের নির্বাচন তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “ভোটের আগে রাতে কোথাও কোনো অনিয়ম ঘটেনি। ভোট চলাকালেও বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটেনি।”
কাজী রকিব বলেন, ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতিতে শনিবারের ভোট হয়েছে। বিশেষ করে, নারী ভোটারদের লাইন ছিল দীর্ঘ। তবে কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।
“আগের তুলনায় এবার ইতিবাচক পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। আশা করি, আগামী নির্বাচনগুলো কোনো ধরনের গোলযোগ ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভোট হবে।”
‘রাজনৈতিক দলের অসহিষ্ণুতায় সহিংসতা’
নবম এই ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত আড়াই মাসে ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে; নির্বাচনী সহিংসতায় আহত হয়েছে সহস্রাধিক মানুষ।
সহিংসতা ও অনিয়ম ‘শূন্যের কোটায়’ আনতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান সিইসি।
ভোটকে কেন্দ্র করে কেন সহিংসতা হবে- এমন প্রশ্ন রেখে কাজী রকিব বলেন, “রাজনৈতিক দলের কর্মীদের অসহিষ্ণুতার কারণে সহিংসতা ঘটছে। মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করলে ও সবার মত প্রকাশে সাহায্য করলে কোনো অঘটন ঘটবে না। আমরা সবার সহযোগিতা চাই।”
সিইসি জানান, এবার ভোটে কেউ যাতে পক্ষপাতিত্ব না করে সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গাজীপুর জেলার এসপি ও দুই ওসি প্রত্যাহার করা হয়। আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে ১৬৪ জনকে ৪ লাখ ১০ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
কিছু কেন্দ্রের ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনার’ তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, একটি কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ছিনতাই ঠেকাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সদস্য আহত হয়েছে। দুইজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে ৬৫টি ও দ্বিতীয় ধাপে ৩৫টি কেন্দ্রের পর তৃতীয় ধাপে ২৪টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধগ্রহণ করা হয়।
প্রথম ধাপে ৭৪ শতাংশ ও দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ ও ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।