এ কেমন ‘জার্নালিজম’: ফখরুল

বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে কয়েকটি সংবাদপত্রে ‘কোন্দলের কল্পকাহিনী’ প্রকাশ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে ওই সব সংবাদ মাধ্যমের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলটির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2016, 01:31 PM
Updated : 14 Feb 2016, 04:58 PM

“যারা এ ধরনের কল্পকাহিনী লিখছেন, তারা কোনো কথা না বলে, মতামত না নিয়ে কেন লিখছেন, প্রচার করছেন, আমরা বুঝি না। এটা সম্পূর্ণ আনইথিকাল। এটা কোন ধরনের জার্নালিজম?”

দলের কাউন্সিল ঘিরে গণমাধ্যমে প্রকাশিত নানা প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রোববার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এই ক্ষোভ ঝরে বিএনপি নেতার কণ্ঠে।

আগামী মাসে বিএনপি কাউন্সিল করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে নেতাদের মতদ্বন্দ্ব, ফখরুলকে কোণঠাসা করতে দুজন মহাসচিবের পদ সৃষ্টির খবর এসেছে।

এসব খবরকে ‘কুচক্রী মহলের কল্পকাহিনী’ আখ্যায়িত করে ফখরুল বলেন, ওয়ান-ইলেভেন থেকেই রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

“আর বিএনপির ব্যাপারে এই চেষ্টাটা আরও বেশি, প্রথম থেকেই। কী করে আমাদের মূল নেতা চেয়ারপারসনের সঙ্গে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের দূরত্ব সৃষ্টি করা যায়, তার জন্য কিছু কিছু কল্পকাহিনী তৈরি করা হচ্ছে। তৈরি করে সেটা আবার প্রচার করা হচ্ছে।”

গণমাধ্যমের উদ্দেশে এই রাজনীতিক বলেন, “পত্রিকার কাটতির জন্য বিশেষ করে আপনারা এগুলোকে (কল্পকাহিনীর সংবাদ) বড় বড় হেডিংয়ে ছাপেন।”

ওই ধরনের সংবাদ প্রকাশ গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অগ্রসর করতে গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রত্যাশা রেখে ফখরুল বলেন, “আজ দেশে গণতন্ত্র নেই, অধিকার নেই। মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, সেই জায়গাটা ফোকাস হওয়া দরকার।”

নইলে গণমাধ্যমের সম্ভাব্য ‘বিপদের’ কথাও মনে করিয়ে দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।  

“দেখেন এর আগেও আমি বলেছিলাম, আজ আমাদের ওপর আক্রমণ হয়েছে, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের উপর আক্রমণ হয়েছে। কালকে কিন্তু আরেকজনের উপর হবে। এটা ফ্যাসিজমের নিয়ম।”

“আজকে দেখেন, ডেইলি স্টার আক্রান্ত হয়ে গেছে, মামলা হয়ে গেছে। অর্থাৎ একটার পর একটা। কেউ ছাড়া পাচ্ছে না। এর মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক থাকবে, তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। বিভিন্নভাবে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো যাতে দুর্বল হয়ে পড়ে, সেজন্য কাজ করবে। এটা অতীতে হয়েছে, এখনও হচ্ছে।”

নিজের কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ফাইল ছবি)

বিচার বিভাগ ও পুলিশের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়েও কথা বলেন ফখরুল।

“সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে আরেকজন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি যে ভাষায় কথা বলছেন, এই বিচার বিভাগের প্রতি, উচ্চ আদালতের প্রতি জাতির আস্থা চলে যাচ্ছে।”

“একইভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা এমন ভাষায় কথা বলেন, যেন তারা সুপার পলিটিক্যাল লিডারস। রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রধানের চাইতেও তারা বড় কোনো কিছু। এতে বোঝা যায়, সরকারের কোনো কর্তৃত্ব কোথাও নেই।”

নির্বাচন কমিশন সরকারের কথায় চলছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।

“এভাবে কখনও গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না। এখানে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করবার চেষ্টা চলছে।”

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ‘নিরপেক্ষ সরকারের’ বিকল্প নেই দাবি করে সে বিষয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করতেও সরকারকে পরামর্শ দেন ফখরুর।

জঙ্গিবাদের সম্ভাব্য বিপদ মোকাবেলায়ও সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহের কথা জানিয়ে তাতে সাড়া আশা করেন তিনি।