দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন নতুন ষড়যন্ত্র: বিএনপি

জাতীয় নির্বাচনের দাবিকে পাশ কাটিয়ে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চিন্তাকে সরকারের ‘নীল নকশার বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আসাদুজ্জামান রিপন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2015, 11:07 AM
Updated : 9 Oct 2015, 12:35 PM

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে রিপন বলেন, “দলীয় প্রতীক ও মনোনয়নে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে প্রচেষ্টা সরকার চালাচ্ছে, এটি একটি নীল নকশা। এটা জাতীয় নির্বাচনকে পাশ কাটানোর উদ্দেশ্য।

“আমরা সরকারের এই কূটকৌশলের নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ফিরে আসতে হবে এবং সরকারকে তা দাবি মেনে নিতে হবে।”

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন অভিযোগ করে বলেন, “দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার মেরে কেটে তথাকথিত সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করবে, এর মধ্য দিয়ে তারা প্রমাণ করতে চায়, ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারে।”

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ‘আজ্ঞাবহ’ অভিহিত করে তিনি বলেন, “এই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা বিগত সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে নিরপেক্ষতার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে চিন্তা সরকার করছে, তা অনুষ্ঠানে কমিশনের শক্তি, সামর্থ ও নিরপেক্ষতা কোনোটাই নেই। ভোটাদের ভোট রক্ষা করতে পারেনি। মানুষকে ভোট কেন্দ্রে আসার সাহস জোগাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।”

আগামী ডিসেম্বরে পৌরসভার নির্বাচন ও মার্চ থেকে ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন।

নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের দলীয় সমর্থন দিতে কোনো আইনি বাধা নেই। তবে দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে হলে বিদ্যমান আইন ও বিধিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

রিপন বলেন, “বিগত সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে যদিও বিভিন্ন মার্কায় নির্বাচন হয়েছে, দলীয় প্রতীকের ভিত্তিতে হয়নি। তারপরও ওইসব নির্বাচনে বিএনপি ও বিরোধী দলের যেসব প্রার্থীরা মেয়র-কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন স্থানীয় সরকারের আইনের মাধ্যমে তাদের অধিকাংশ নির্বাচিত মেয়র ও চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারিত ও বরখাস্ত করা হয়েছে।”

এ অবস্থায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে বিএনপি থেকে কেউ নির্বাচিত হলে তাদের বের করে দেওয়া সহজ হবে বলে মন্তব্য করেন রিপন।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে করার বিষয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “উন্নত দেশগুলোতে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়। এটাকে নীতিগতভাবে সমর্থন না করার কোনো কারণ নেই। তবে বাংলাদেশের বিভাজিত রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় এবং রাজনীতিতে যেভাবে অপরাজনীতি চর্চা হয়, তাতে করে শঙ্কা জাগে সেখানে ভিন্ন দলের লোকেরা নির্বাচিত মেয়র ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সত্যিকার নাগরিক সেবাটা পাবেন কিনা। সেজন্য বিষয়টি আমরা বিবেচনার করার কথা বলতে চাই।”

স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীক ও মনোনয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেন আসাদুজ্জামান রিপন।

একই সঙ্গে তিনি একটি ‘নিরপেক্ষ নিবার্চন কমিশন’ গঠনেরও আহ্বান জানান।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার পিরোজপুর জেলার বানিপাড়া ইউনিয়নের ছাত্রদলের আটক সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদের মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মুখপাত্র।

অন্যদের মধ্যে দলের গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, তকদির হোসেন জসিম, খন্দকার আখতার হামিদ লাবলু প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।