এরশাদের রাডার দুর্নীতি মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু

বিমানের রাডার কেনার দুর্নীতি মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2015, 07:11 PM
Updated : 30 Sept 2015, 07:11 PM

বুধবার দেড় ঘণ্টা আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে ১৫ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।

আদালতে আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম তার যুক্তিতর্কে এরশাদ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে এ মামলা প্রমাণের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কোনো সাক্ষ্য আসেনি। সব সাক্ষীই বলেছেন যে তিনি নিয়ম মেনেই আইনের আওতায় থেকে রাডার কেনায় অনুমতি দিয়েছিলেন।”

সাবেক সামরিক শাসক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা গত বছরের জুন পর্যন্ত চলছিল ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে।

মামলাটির বিচারের শেষ পর্যায়ে এসে তখনকার বিচারক আবদুর রশীদ মামলার শুনানিতে বিব্রত বোধ করে এ আদালতে মামলাটি বিচারের জন্য পাঠিয়ে দেন।

ওই আদালতে দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষ্য গ্রহণ ও আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে কয়েক দফায় রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্কের শুনানি করেছিল।

তবে এ বছরে মামলাটির রায় হতে পারে কি না- এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি আসামি বা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

গত বছরের ১৫ মে এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন এরশাদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্য দিয়েছিলেন।

সেদিন অন্য দুই আসামি সেসময়কার বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সুলতান মাহমুদও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার চেয়েছিলেন।

এ মামলায় এর আগে আদালতের অনুমতিক্রমে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার দায় থেকে মুক্তি পান এরশাদ। সে কারনে তার আইনজীবীই তার পক্ষে হাজির থাকেন প্রতি ধার্য তারিখে।

বুধবার এরশাদ আদালতে না এলেও এসেছিলেন অন্য দুই আসামি। বাকি আসামি একেএম মুসা শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।

এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ১৯৯২ সালের ৪ মে বিমানের রাডার কেনায় দুর্নীতির এই মামলার আসামি হন। দুর্নীতি দমন ব্যুরো এই মামলাটি দায়েরের দুই বছর পর ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি থাকাকালে এরশাদসহ অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কম্পানির অত্যাধুনিক রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিন কম্পানির রাডার কিনে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি করে।

১৯৯৫ সালের ১২ অগাস্ট এরশাদসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত ছিল মামলাটি।

এরপর সাক্ষ্যগ্রহণে বাধা না থাকলেও মামলা এগোয়নি। মামলার বাদী দুর্নীতি দমন ব্যুরোর কর্মকর্তা আলী হায়দারকেও আদালতে হাজির হতে হয়নি। ইতোমধ্যে ব্যুরো বিলুপ্ত হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হয়।

মামলার ১৮ বছর পর ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হয় বাদীর সাক্ষ্য প্রায় ১০টি ধার্য তারিখের পর ২০১২ সালের ১ মার্চ বাদীর সাক্ষ্য শেষ হয়।