শনিবার ছাত্রলীগের ২৮তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যের এক পর্যায়ে হাসতে হাসতে নিজের দুঃখের কথাটি বলেন সবচেয়ে বেশি সময় বাংলাদেশের সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করা শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এই ছাত্র সংগঠনটির সম্মেলন বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধনের পর সাবেক ও বর্তমান নেতাদের বক্তৃতা শুনে নিজে কথা বলতে দাঁড়ান প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা।
৪১ মিনিটের বক্তব্যের শুরুর দিকে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “আমরা ছাত্রলীগ করেই আজ এই নেতৃত্বে এসেছি।”
“আমি নিজেও ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। নেতা হওয়ার সুযোগ আমার হয়নি কখনও”, হাসতে হাসতে বলেন তিনি।
“ছাত্রলীগের সেন্ট্রাল কমিটিতে আমাকে কখনও একটা সদস্য পদ দেওয়া হয়নি। এটা আমার একটা দুঃখ। আমি প্রতিবারই বলি।”
বঙ্গবন্ধুকন্যা হাসিনা আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এর আগেও নিজের এই দুঃখবোধ প্রকাশ করেছিলেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের সন্তান হিসেবে রাজনীতি সচেতন হিসেবে গড়ে ওঠার কথাও বলেন শেখ হাসিনা; পরে যিনি বাবাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক এবং নতুন রাষ্ট্রের নায়ক হিসেবেও দেখেছেন।
“দেশের চরম দুঃসময়ে প্রতিটি আন্দোলনেই রাজপথে ছিলাম। সেই স্কুল জীবন থেকে।”
আজিমপুর গার্লস স্কুলের পড়ার সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “স্কুলের গেট বা ওয়াল টপকে মিছিলে যোগ দিতাম। কলেজেও সেভাবেই যোগ দিয়েছি।”
স্বাধীনতার আগে কলেজ সংসদের ভিপি হওয়ার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে যেটা বদরুন্নেসা কলেজ, সেটা ইডেন ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ ছিল। সে কলেজে আমি ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির একজন সামান্য সদস্য ছিলাম।”
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রবাস থেকে বৈরী পরিবেশে দেশে ফিরে ছাত্রলীগ গোছানোয় নিজের তৎপরতার কথাও এই প্রজন্মের নেতা-কর্মীদের কাছে তুলে ধরেন তিনি।
“আমি দেশে ফিরে এই সংগঠনের নিয়ম-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনি। এই নিয়ম-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মধ্যে বহু প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। অনেক সময় ভাঙনের সম্মুখীন হতে হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বিদেশে থাকা অবস্থায়ই ১৯৮১ সালে তাকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয়। ওই বছরের ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে ফেরেন।