রামপাল: বরখাস্ত ইঞ্জিনিয়ার থেকে শতকোটিপতি গুরু

রামপাল দাসকে ২০০০ সালে হরিয়ানার সেচ বিভাগের সহকারী ইঞ্জিনিয়ারের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। সেই রামপালই এখন শতকোটি রুপি মূল্যের আশ্রমের প্রধান যার নাম এখন সারগুরু রামপাল জি মহারাজ।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2014, 09:57 AM
Updated : 20 Nov 2014, 02:12 PM

হরিয়ানার বারওয়ালা এলাকায় যে আশ্রমটিতে তিনি বাস করেন তা ১২ একর জায়গাজুড়ে ছড়ানো।

দুই সপ্তাহ চেষ্টার পর বুধবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

তার বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়ানো ও জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে ২০০৬ সালে এক হত্যা মামলায় জামিনে ছিলেন তিনি। ৪৩ বার হাজিরায় অনুপস্থিত থাকার পর তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত।

তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগও দায়ের করা হয়। রামপালকে আদালতে হাজির করতে না পারায় সরকারের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করে হরিয়ানার উচ্চ আদালত তাকে গ্রেপ্তারে চূড়ান্ত সময়সীমা বেধে দেয়।

এরপরই রামপালকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ। দুই সপ্তাহ আগে অভিযান শুরু করলেও পুলিশকে ঠেকিয়ে রাখে “বাবার কমান্ডো” নামে পরিচিত তার অনুসারীরা।

মঙ্গলবার এই স্বঘোষিত ‘কমান্ডোরা’ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উচ্চ আদালতের দেয়া গ্রেপ্তারের আদেশ ঠেকাতে পুলিশের বিরুদ্ধে এসিড, বোমা ও বন্দুক ব্যবহার করে তারা।

৩০ ফুট উঁচু ও দুই ফুট প্রশস্ত দেয়াল দিয়ে ঘেরা সুরক্ষিত আশ্রমে থাকা ‘বাবাকে’ রক্ষা করতে তার ভক্ত নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বাবার সেনারা।

আশ্রমে ভগবানের স্বঘোষিত এই প্রতিনিধির নিজের ঘরটি কেবল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়, তার গুরুত্বপূর্ণ অনুসারীদের ঘরও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। আশ্রমের ভাষণ কক্ষটিতে লেড স্ক্রিন লাগানো আছে।

তার নামে ফেইসবুকে একটি পেইজ ও ইউটিউবে একটি চ্যানেল খোলা আছে, এতে তার ধর্মীয় ভাষণ শোনার ও দেখার ব্যবস্থা আছে।

বুধবার একদিনের মধ্যেই তার ফেইসবুক পেইজটিতে নতুন ২,০০০ লাইক পড়েছে।

উত্তর প্রদেশে, হরিয়ানা, দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে ও পাঞ্জাবে তার ২৫ লাখ ভক্ত আছে বলে কথিত।

খুনের অভিযোগে তার কারাদণ্ড হয়েছে এবং জামিনে কারাগারের বাইরে ছিলেন তিনি। রোহটাকে তার প্রকৃত আশ্রম আক্রমণের শিকার হলে তিনি বারওয়ালায় চলে আসেন। বারওয়ালায় আশ্রমটির অল্প দূরে নতুন আর একটি আশ্রম তৈরি করা হচ্ছে।

শোনা যায় দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি আছে।

দিল্লির অদূরে হরিয়ানার সোনেপাতে এক কৃষক পরিবারে রামপাল দাসের জন্ম। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেয়া রামপাল ৪৮ বছর বয়স পর্যন্ত সহকারী ইঞ্জিনিয়ারের পদে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু “উদাসীনতার” জন্য তার চাকরি যায়।