দুর্নীতির অভিযোগে দেশটির অন্যতম বিতর্কিত ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী জয়ললিতাকে সেপ্টেম্বরে চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে জেলে পাঠায় আদালত।
১ কোটি ডলারের অবৈধ সম্পদ রাখায় ১৮ বছর আগে তার বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
বিবিসি বলছে, সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার কর্নাটক রাজ্যের হাইকোর্টে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নথি যথাযথভাবে দেয়ার শর্তে তাকে দুই মাসের জামিন দিয়েছে।
২৭ সেপ্টেম্বর থেকে জেলে ছিলেন জয়ললিতা।
জয়ললিতার আইনজীবীরা অসুস্থতা ও উচ্চতর আদালতে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল চলছে বিধায় ৬৬ বছর বয়সী সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রীর জামিন পাওয়া উচিৎ বলে সরব হন।
কিন্তু আদালত জয়ললিতাকে সকর্ত করে জানিয়ে দিয়েছে, তিনি যদি শর্তপূরণ করতে ব্যর্থ হন তবে জামিনের মেয়াদ একদিনও বাড়ানো হবে না।
সর্বোচ্চ আদালত জয়ললিতার প্রতি তার দল এডিএমকে’র কর্মীদের সংযত হতে নির্দেশ দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।
সেপ্টেম্বরে ব্যাঙ্গালুরুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত একটি বিশেষ আদালত জয়ললিতার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যাপক বিক্ষোভ করে।
আদালত জয়ললিতাসহ আরো তিনজনকে পৃথকভাবে চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। জয়ললিতাকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০০ কোটি রূপি জরিমানাও করে আদালত।
বাকি তিনজনকে ১৬ লাখ রূপি করে জরিমানা করা হয়।
১৮ বছর আগে ললিতার অবৈধ সম্পদ রয়েছে অভিযোগ তুলে মামলাটি করেছিলেন বর্তমানের বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী। পরে জয়ললিতার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ডিএমকে ক্ষমতায় এলে এই মামলা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়।
আদালতের রায়ে জয়ললিতার ঘনিষ্ঠ সসিকালা নটরাজনসহ তিন সহযোগীকেও কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়, ১৯৯১ থেকে ৯৬ সালে প্রথমবারের মতো তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদ গড়েছেন।
বাদি পক্ষের অভিযোগ, প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে জয়ললিতা মাত্র এক রূপি বেতন নিতেন। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তিনি কমপক্ষে ৬৬ কোটি রূপির অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ললিতার অবৈধ সম্পদের মধ্যে দুই হাজার একর জমি, ৩০ কেজি সোনা এবং ১২ হাজার শাড়ি রয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে মামলাটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন জয়ললিতা।
তার বক্তব্য, রাষ্ট্রপক্ষ তার আগের সম্পদের মূল্য কমিয়ে দেখেছে, অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া আয়ও এড়িয়ে গেছে। এবং তার সম্পদের প্রকৃত মূল্য থেকে বাড়িয়ে দেখাচ্ছে।