‘স্যাটানিক ভার্সেস’ নিষিদ্ধ করা ভুল ছিল: চিদাম্বরম

সালমান রুশদির বিতর্কিত উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ার ২৭ বছর পর দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন, রাজীব গান্ধী সরকারের নেওয়া ওই সিদ্ধান্ত ‘ভুল’ ছিল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2015, 07:41 AM
Updated : 29 Nov 2015, 07:41 AM

শনিবার দিল্লিতে ‘টাইমস লিটফেস্ট’র আলোচনায় অংশ নিয়ে চিদাম্বরম বলেন, “আমার বলতে দ্বিধা নেই, সালমান রুশদির বইটি নিষিদ্ধ করা ভুল ছিল।”

চিদাম্বরম ১৯৮৬-৮৯ সময়ে রাজীব গান্ধী সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী  ছিলেন। মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভায়ও শুরুতে একই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। পরে তাকে অর্থমন্ত্রী করা হয়।

চিদাম্বরমের বক্তব্যের পর টুইটে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রুশদি লিখেছেন, “ভুল স্বীকার করতেই ২৭ বছর, তাহলে সংশোধনে কত সময় লাগবে?”

১৯৮৮ সালে রুশদির চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশিত হলে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই ব্রিটিশ লেখকের মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া ঘোষণা করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি।

অন্য অনেক দেশের মত ভারত সরকারও সে সময় স্থানীয় বাজারে বইটি নিষিদ্ধ করে।

হুমকি মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন ব্রিটিশ সরকারের নিরাপত্তায় থাকার পর ২০০০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন রুশদি। দুই বছর আগে তিনি জয়পুর সাহিত্য উৎসবে যোগ দেওয়ার আগ্রহ দেখালেও ভারতের কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের হুমকির মুখে তা আর সম্ভব হয়নি।   

চিদাম্বরম মনে করেন, ১৯৮০ সালে ইন্দিরা গান্ধী সরকারের জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্তও ‘ভুল’ ছিল।

“জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, সেটা ইন্দিরা গান্ধীও স্বীকার করেছিলেন। পরে ক্ষমতায় এলে কোনোদিন জরুরি অবস্থা জারি করবেন না বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। জনগণ তার কথায় বিশ্বাস রেখেছিল এবং তাকে আবার ক্ষমতায় বসিয়েছিল।”

এতদিন পর কেন সেই ভুল স্বীকার- এমন প্রশ্নে ভারতীয় কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, “২০ বছর আগে যদি আমাকে এ প্রশ্ন করা হত, তাহলে তখনও আমি একই কথা বলতাম।”

ইদানিং ভারতে ‘অসহিষ্ণুতা’ বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও ধীরে ধীরে তা কমে আসবে বলে আশাবাদী চিদাম্বরম।

খারাপ হোক, কিংবা ভালো- কোনো মতবাদই ‘নিষিদ্ধ’ করা উচিত নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ধারণা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাচ্ছে। এখানে সব চিন্তাধারাই যে গ্রহণযোগ্য হবে , তা না। কিন্তু সব চিন্তাধারার নিজস্ব অবস্থান থাকা উচিত এবং তা প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে।”