এ সম্পর্কে বসুন্ধরা সিটির `দেশি দশ’য়ের ফ্যাশন ঘর ‘রঙ’য়ের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন “প্রতি বছরের মতো এবারও স্বাধীনতা দিবসের পোশাকের মধ্যে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ এবং পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। তবে গ্রীষ্মের গরমের কারণে মেয়েদের টপস বা ফতুয়া এবং ছেলেদের টি শার্টের বিক্রিও কম নয়।”
শাড়ি
দেশীয় ফ্যাশন ঘরগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ শাড়ি। শাড়ির ডিজাইনে লাল এবং সবুজ রংয়ের প্রাধান্যই বেশি লক্ষ করা গেছে। ডিজাইন এবং মানভেদে এমব্রয়ডারি, ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট ইত্যাদি শাড়ির দাম পড়বে ১ হাজার ২শ’ থেকে ২ হাজার ৬শ’ টাকা।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বসুন্ধরা সিটির দেশি দশের ‘বাংলার মেলা’ ফ্যাশন ঘরে পাওয়া যাচ্ছে সুতি কাপড়ের ব্লক কিংবা এমব্রয়ডারি করা বিশেষ শাড়ি। এক্ষেত্রে দাম ১ হাজার ৪শ’ থেকে ১ হাজার ৬শ’ ৫০ টাকা।
‘দেশাল’য়ে পাওয়া যাচ্ছে সুতির লাল-সবুজ শাড়ি। এদের মধ্যে ব্লকের শাড়ির দাম পড়বে ১ হাজার ৩শ’ ৯০ টাকা। ব্লক ছাড়া শাড়ি পাওয়া যাবে ১ হাজার ১শ’ ৯০ টাকায়।
‘কে ক্র্যাফট’ থেকে সবুজের উপর লাল কাজ করা শাড়ি পাওয়া যাবে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকায়। এদের মধ্যে তুলনামূলক বেশি দামের শাড়িগুলোতে ব্লক-বাটিকের কাজ করা হয়েছে। শাড়িগুলোতে লাল সবুজের পাশাপাশি সাদা ও কলাপাতা রং ব্যবহার করা হয়েছে।
দেশি দশের ‘রঙ’য়ে পাওয়া যাচ্ছে সবুজ এবং লালের মিশ্রণে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ শাড়ি। হাফ সিল্ক, কটন এবং তাঁতের মধ্যে এই শাড়িগুলো পাওয়া যাবে ১ হাজার ২শ’ ৫০ টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়।
শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের ‘কাপড়-ই-বাংলায়’ পাওয়া যাচ্ছে সুতির উপর হ্যান্ড প্রিন্ট, ব্লক এবং হাতের কাজের লাল সবুজ শাড়ি। এ শাড়ি পেতে হলে খরচ করতে হবে ১ হাজার ২শ’ ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা।
এছাড়া একই জায়গার ‘অন্যরকম’ দোকানে স্বাধীনতা দিবসের শাড়ি পাওয়া যাবে ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৬শ’ ৫০ টাকায়। ‘নন্দন কুটির’য়ের শাড়ি কিনতে হলে গুনতে হবে ১ হাজার ২শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ ৫০ টাকা।
সালোয়ার কামিজ
কম বয়সি মেয়েদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে শহরের বিপণিবিতানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ সালোয়ার কামিজ ও সিঙ্গেল কামিজ।
বসুন্ধরা সিটির ‘বাংলার মেলা’ থেকে সুতির ওপর কাজ করা সালোয়ার কামিজ পাওয়া যাবে ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ২শ’ ৫০ টাকায়।
‘কে ক্র্যাফট’ এ পাওয়া যাবে সুতি কাপড়ের লাল সবুজ সালোয়ার কামিজ। দাম ১ হাজার ২শ’ ৫০ থেকে ৩ হাজার টাকা। সালোয়ার কামিজগুলোতে লাল সবুজ ছাড়াও কলাপাতা রং ব্যবহার করা হয়েছে।
‘অঞ্জনস’য়ে সবুজের উপর লাল কাজ করা সুতির সালোয়ার কামিজ পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার ১শ’ টাকায়।
শাহাবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের ‘বিসর্গ’ থেকে সুতির থ্রি পিস পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮শ’ টাকায়। এগুলোর মধ্যে সালোয়ারে লাল এবং কামিজে সবুজের উপর লাল রংয়ের কাজ করা হয়েছে।
‘কাপড়-ই-বাংলা’ য় পাওয়া যাবে তাঁতের সালোয়ার কামিজ। দাম শুরু ১ হাজার ২শ’ থেকে। তাঁত বা সুতি কাপড়ের ওপর ব্লক এবং হাতের কাজের সালোয়ার কামিজ পাওয়া যাবে ২ হাজার ২শ’ টাকায়। সঙ্গে বাংলা লেখা প্রিন্ট করা ম্যাচিং ওড়না নিতে পারেন ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকায়।
টপস ফতুয়া
গ্রীষ্মকালে তরুনীদের মধ্যে টপস এবং ফতুয়ার কেনার আগ্রহ লক্ষ করা যায়। বসুন্ধরা সিটির ‘দেশাল’ থেকে খাদি কাপড়ের টপস পাওয়া যাবে ৫শ’ থেক ৭শ’ টাকায়।
‘কে ক্র্যাফট’ থেকে মেয়েদের ফতুয়া কিনতে হলে খরচ করতে হবে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৬শ’ টাকা। ফতুয়াগুলোতে মূলত সবুজের উপর লাল এবং কলাপাতা রংয়ের মিশ্রণ রয়েছে।
‘রঙ’য়ে পাওয়া যাবে স্বাধীনতা দিবসে মেয়েদের জন্য বিশেষ কুর্তা। দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শ’ ৫০ টাকা।
শাহাবাগের ‘বিসর্গ’ থেকে খাদি কাপড়ের ফতুয়া পাওয়া যাবে ৬৮০ থেকে ৭৫০ টাকায়। একই জায়গার ‘বাঙ্গাল’য়ের শোরুম থেকে মেয়েদের সবুজের ওপর লাল ফতুয়া পাওয়া যাবে ৬৯০ থেকে ৭৫০ টাকায়। এছাড়া ‘কাপড়-ই-বাংলা’ থেকে লিলেন এবং সুতি কাপড়ের ফতুয়া পাওয়া যাবে ৭৯০ থেকে ৯৮০ টাকায়।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ছেলেদের আগ্রহের কমতি নেই। তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, টিশার্ট এবং ফতুয়া। তবে রংয়ের মধ্যে লাল সবুজের প্রাধান্যই বেশি।
পাঞ্জাবি
স্বাধীনতা দিবসে ছেলেদের পোশাক সম্পর্কে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানে অধ্যয়নরত ক্রেতা আশিক আল আজাদের সঙ্গে। তিনি বলেন “স্বাধীনতা দিবসের দিনে লাল সবুজ রংয়ের পাঞ্জাবি কিংবা ফতুয়া মূলত বাংলাদেশের ঐতিহ্য ধারণ করে। এ ধরনের উপলক্ষে তাই দেশের পতাকার সঙ্গে মিল রেখে পোশাক কেনার চেষ্টা থাকে।”
তাঁত এবং সুতি পাঞ্জাবি কিনতে হলে ঘুরে আসতে পারেন বসুন্ধরা সিটির ‘রঙ’ থেকে। দাম হবে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৫শ’ ৫০ টাকা। ‘বাংলার মেলা’ থেকে সুতি কাপড়ের ওপর হালকা কাজের লাল সবুজ পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ২শ’ ৫০ টাকায়। ‘কে ক্র্যাফট’য়ে ছেলেদের হালকা কাজের শর্ট পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৫শ’ ৫০ টাকায়।
শাহবাগের ‘নোঙর’ থেকে লাল সবুজ পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকায়। এছাড়া ‘বাঙ্গাল’ থেকে সুতির পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ১ হাজার টাকায়।
টি শার্ট ও ফতুয়া
গরমের কথা মাথায় রেখে স্বাধীনতা দিবসে কিনে নিতে পারেন লাল সবুজের ফতুয়া কিংবা টিশার্ট। এক্ষেত্রে ‘অঞ্জনস’ এ ছেলেদের ফতুয়া পাওয়া যাবে ৬৯৫ থেকে ১০৬৫ টাকায়। ‘রঙ’ থেকে ছেলেদের ফতুয়া কিনতে হলে গুনতে হবে ৭৫০ থেকে এক হাজার ৫০টাকায়। ‘দেশাল’য়ে পাওয়া যাবে খাদি কাপড়ের ওপর বর্ণমালা সম্বলিত লাল সবুজ ফতুয়া। দাম ৬৫০ থেকে ৭শ’ টাকা।
একটু ভিন্নতা আনতে আজিজ সুপার মার্কেটের ‘কাপড়-ই-বাংলা’ থেকে কিনে নিতে পারেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানের কথা সম্বলিত ফতুয়া। খাদি কাপড়ের উপর প্রিন্ট করা এই ফতুয়া পাওয়া যাবে ৪৫০ টাকায়। একই মার্কেটের ‘বাঙ্গাল’ থেকে নিয়ে নিতে পারেন বাংলাদেশের প্রথম ডাক টিকিট স্ট্যাম্পের প্রিন্ট সম্বলিত বিশেষ ফতুয়া। এক্ষেত্রে খরচ করতে হবে ৬৫০ টাকা।
‘কে ক্র্যাফট’ থেকে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ টি শার্ট পাওয়া যাবে ৩২০ টাকায়। একই দোকানে লাল সবুজ হাফ হাতা শার্ট কিনতে হলে গুনতে হবে ১ হাজার ৫০ টাকা। ‘রঙ’য়ে ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে লাল সবুজ টি শার্ট। টি শার্টগুলোতে ‘আমার সোনার বাংলা’ লেখা রয়েছে।
শাহবাগের ‘রাঙা’ থেকে সবুজ জমিন এবং লাল বৃত্তের বাংলাদেশের পতাকা সদৃশ টি শার্ট পাওয়া যাবে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। টি শার্টগুলোতে বাংলাদেশের মানচিত্রের প্রিন্ট রয়েছে।
যুগল পোশাক
শিশুদের জন্য
এছাড়া ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বিপণিবিতানগুলোর রয়েছে বিশেষ আয়োজন। ‘কে ক্র্যাফট’ থেকে ছোট মেয়েদের সালোয়ার কামিজ পাওয়া যাবে ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকায়। একই দোকানে ছোট মেয়েদের টপস পাওয়া যাবে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়।
শাহবাগের দোকানগুলোতে ছোট মেয়েদের লাল সবুজ সালোয়ার কামিজ পাওয়া যাবে ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকায়। এছাড়া ফতুয়া পাওয়া যাবে ২৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়।
দেশীয় ফ্যাশন হাইউজগুলোতে ১ থেকে ১২ বছর বয়সি ছেলেদের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ৩শ’ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়। এছাড়া ছোট ছেলেদের লাল সবুজ ফতুয়া পাওয়া যাবে ৩শ’ থেকে ৬৫০ টাকায়।
দেশের পতাকার সঙ্গে মিল রেখে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ পোশাক পরিধানের রীতি বহুদিন ধরে চলে আসছে। তাই দেরি না করে লাল সবুজ পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে নিতে ঘুরে আসতে পারেন শহরের ফ্যাশন ঘর এবং অন্যান্য বিপণিবিতানগুলো থেকে।
ছবি: স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের।