নতুন আসবাব দিয়ে ঘর সাজাতে চান সবাই। তবে সবসময় সাধ্যের মধ্যে মেলে না সবটুকু সুখ। তাই বলে সাজাবেন না শখের ঘর! তা তো হয় না। আশার আলো দেখাতে পারে রাজধানীর জাহাজের এবং দেশি পুরানো আসবাবপত্রের দোকানগুলো।
পুরানো বা ব্যবহৃত ফার্নিচার
এছাড়াও সেগুনবাগিচা, শিল্পকলা একাডেমির পাশে, মিরপুর স্টেডিয়াম, মিরপুর-২, সেক্টর-৩, উত্তরা প্লট-৪, প্রগতি সরণি, বারিধারা জে-ব্লক, বাড্ডা এলাকাতেও পাবেন পুরানো আসবাবপত্রের দোকান।
এরকমই একটি পুরানো ফার্নিচারের দোকান ‘ওয়াশিং ফার্নিচার’। বাইশ বছর ধরে পান্থপথে পুরানো আসবাবপত্র বিক্রি করছেন দোকানের মালিক মোহাম্মদ দ্বীন ইসলাম।
তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ওয়াশিং ফার্নিচারের মতো প্রায় ৩০টি পুরানো ফার্নিচারের দোকান আছে পান্থপথে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ধনী ও শৌখিন ব্যক্তিদের বাসা, ব্যাংক, অফিস বা দূতাবাস থেকে এই আসবাবগুলো কিনে আনেন তারা।
চাইলে যে কেউ পুরানো আসবাবগুলো বিক্রি করতে পারবেন এদের কাছে, জানালেন দ্বীন ইসলাম।
পরিসর ছোট হলেও সবধরনের আসবাব পাবেন দোকানগুলোতে। মূলত সেগুনকাঠের আসবাবই বেশি। দরদামেরও কিছুটা আভাস দিলেন দ্বীন ইসলাম।
সিঙ্গেল ও ডাবল খাটের দাম পড়বে ৩ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। ওয়ারড্রব ৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। ২ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় পাওয়া যাবে টেবিল। চেয়ার পাবেন ৫শ’ থেকে ৮ হাজার টাকায়।
সোফা কিনতে গুনতে হবে ১৪ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। শোকেইস পাওয়া যাবে ১৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকায়। স্টিলের আলমারিও আছে, দাম ৯ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা।
সব আসবাবপত্রেই ২০ বছরের গ্যারান্টি দেয়া হয় বলে জানালেন দ্বীন ইসলাম। এই সময়ের মধ্যে আসবাব ঘুনে ধরলে পরিবর্তন করে অন্য আসবাব নিতে পারবেন ক্রেতারা। আরও জানান, পুরানো আসবাবের দোকানগুলোতে ব্যাচেলর ক্রেতার সংখ্যাই বেশি।
জাহাজের আসবাবপত্র
পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি পার হয়ে কাওরান বাজারের দিকে কয়েক পা এগোলেই পেয়ে যাবেন এরকমই একটি দোকান, ডিসি ফরেন ফার্নিচার। দোকানের অডিটর হুমায়ন কবির জানালেন, ২০ বছর ধরে জাহাজের আসবাব বিক্রি করছেন তারা।
এখানেও ব্যাচেলর ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি।
দেশি-বিদেশি অকেজো জাহাজগুলো থেকে নিলামে ফার্নিচার কিনে আনেন দোকানের মালিক মূলতান আলী।
দোকানের ম্যানেজার আবু তালেব জানালেন, জাহাজের ফার্নিচারগুলো মূলত হয় ওক কাঠের। জাহাজের আসবাব ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে আসবাব আমদানি করেন তারা, ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ি বানিয়েও দেন।
শখের হোক আর প্রয়োজনীয়, সবরকম আসবাব আছে বিশাল এই দোকানে। ড্রয়িং রুমের টেবিল, ডাইনিং টেবিল-চেয়ার সেট, টি টেবিল, কম্পিউটার টেবিল, রকিং চেয়ার, অফিসিয়াল চেয়ার, বাচ্চাদের দোলনা, দেয়ালের তাক, ছোট-বড় আলমারি, ওয়ারড্রব, খাট আরও কত কি!
দামও ক্রয়সীমার মধ্যেই। চেয়ার পাবেন ৩শ’ থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকায়। খাট কিনতে পড়বে ৪ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। ওয়ারড্রব আড়াই হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা, আলমারি পাবেন ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকায়।
এছাড়াও আছে আসবাবের প্যাকেজ, যাতে থাকবে একই ডিজাইনের খাট, ড্রেসিং টেবিল, শোকেইস, আলমারি ইত্যাদি। দাম পড়বে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা।
সব ফার্নিচারে পাবেন ১০ বছরের ওয়ারেন্টি।
পান্থপথ ছাড়াও তেজগাঁও, ১৭৭/২ উত্তর যাত্রাবাড়ী, ১৬৮ উত্তর যাত্রাবাড়ীতেও পাবেন জাহাজের আসবাবপত্রের দোকান।
ছবি: শিশির।