সৌন্দর্যচর্চায় ত্বকের ক্ষতি

ত্বক পরিচর্যার উপাদান বা প্রসাধনী অনেক সময় ক্ষতিও করতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2017, 11:03 AM
Updated : 5 April 2017, 11:04 AM

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে জানানো হয়- লেবু, সুগন্ধি, ডিওডোরেন্ট এমনকি অতিরিক্ত ‘স্ক্রাবিং’ থেকে ত্বকের সমস্যার পাশাপাশি হতে পারে প্রাণঘাতী অসুখ।

লেবু থেকে জ্বালাভাব: ত্বক উজ্জ্বল এবং বলিরেখা দূর করতে লেবুর ব্যবহার বেশ পুরানো। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত।

তবে প্রতিদিন ত্বকে লেবুর রস ব্যবহার হতে পারে হিতে বিপরীত। কারণ লেবুর অ্যাসিডিক উপাদানের কারণে ত্বকে জ্বলুনি ও প্রদাহ হওয়ার পাশাপাশি চামড়া সংবেদনশীল হয়ে যেতে পারে।

এছাড়াও লেবু ব্যবহার করে রোদে গেলে আরও বেশি ক্ষতি হয়। তাই ত্বকের জন্য ভিটামিন সি প্রয়োজন মনে করলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ তেলযুক্ত সিরাম বেছে নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন অ্যাসকরবিক অ্যাসিডের মাত্রা ২৫ শতাংশর কম থাকে।

এছাড়া প্রতিদিন সকালে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস গুলিয়ে পান করলে শরীরের ভিটামিন সির চাহিদা পুরণ হবে। তবে যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে তাদের খালিপেটে লেবুপানি খাওয়া ঠিক হবে না।

সুগন্ধির ক্ষতিকর দিক: প্রতিটি সুগন্ধিতে প্রায় ১৪টি গোপন উপাদান থাকে যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারীর জন্য ক্ষতিকর। এই গোপন উপাদানগুলোর মধ্যে বেশকিছু সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি আকৃষ্ট করে। যা ত্বকে ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

নামিদামি ব্র্যান্ডের সৌরভগুলোও হতে পারে ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই নিজেকে সুরভিত রাখতে পারফিউমের বদলে প্রাকৃতিক উপদান দিয়ে তৈরি ‘মিস্ট’ বা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে তৈরি নয় এরকম ‘কোলন’ বেছে নেওয়া যেতে পারে।

ত্বকের ক্ষতির পাশাপাশি পারফিউমের কড়া গন্ধও হতে পারে ক্ষতিকর। সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহৃত কেমিকল ঘ্রাণের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশের ফলে হরমোনের তারতম্য, অ্যালার্জি, মাইগ্রেইন শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। তাই এই বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।

ঘামরোধক প্রসাধনী থেকে স্তন ক্যান্সার:  এই ধরনের ডিওডোরান্ট তৈরিতে ‘টক্সিক অ্যালুমিনিয়াম সল্ট’ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেহেতু ডিওডোরান্ট স্তনের কাছাকাছি অংশেই ব্যবহার করা হয় তাতে এই অংশের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে।

এছাড়াও ‘ডিওডোরান্ট’ তৈরিতে ‘ফালাইটস’ এবং ‘পারাবেন’ নামক প্রিজারভেটিভ বা সংরক্ষকদ্রব ব্যবহৃত হয় যা অনেক ক্ষেত্রেই উপাদানের তালিকাতে উল্লেখ করা থাকে না।

এই ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায় যখন বাহুমূল পরিষ্কার করার পরপরই ডিওডোরান্ট ব্যবহার করা হয়।

এক্ষেত্রে নিয়মিত বাহুমূল দিনে একাধিকবার পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তবে দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পেতে বেইকিং সোডা বা ‘কর্নস্টার্চ’ সমৃদ্ধ পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্ক্রাব থেকে ব্রণ: ত্বকের উপরের স্তরে জমে থাকা মৃতকোষ ও ময়লার আস্তরণ পরিষ্কার করতে স্ক্রাবিং বেশ পরিচিত একটি প্রক্রিয়া।

চিনি, লবণ, কফি ইত্যাদি দিয়ে তৈরি ঘরোয়া স্ক্রাব এখন বেশ জনপ্রিয়। তবে এই উপাদানগুলোর ছোট আকারের দানাও হতে পারে ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।

এই দানাগুলো দিয়ে মালিশ করা হলে অনেক সময় ত্বকে সূক্ষ্ম প্রদাহ তৈরি হতে পারে যা খালি চোখে ধরা পরে না।

মুখের ত্বক শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় পাতলা হয়। তাই চিনি বা লবণের দানাগুলো মুখের ত্বকে ব্যবহার না করাই ভালো। এক্ষেত্রে ওটমিলগুঁড়া বেছে নেওয়া যেতে পারে।

সপ্তাহে দু’বারের বেশি স্ক্রাবার ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া হালকা হাতে স্ক্রাব মালিশ করতে হবে।