মুখের প্রদাহ ‘মাউথ আলসার’

৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সেরে যায় এই প্রদাহ। তবে এই সময়ের ভোগান্তিতে আপনি হবেন অতিষ্ঠ।

মামুনুর রশীদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Dec 2016, 05:02 AM
Updated : 20 Dec 2016, 05:02 AM

মুখের ভেতরে ঘা বা আলসার খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। এটি মুখের মধ্যে আকারে ছোট হলুদ কিংবা লাল বর্ণের একটি প্রদাহ, যার চারপাশ হয় লাল রংয়ের।

এই সমস্যার মূল কারণ পরিষ্কারভাবে জানা না গেলেও মূলত ভিটামিন সি’র অভাব, দুশ্চিন্তা এবং হরমোনের ভারসাম্য পরিবর্তনের কারণে মুখের ভিতর এ ধরনের ঘা’য়ের প্রকোপ দেখা যেতে পারে।

এ বিষয়ে ফাস্ট কেয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, “বিভিন্ন কারণেই এই সমস্যা হতে পারে। অন্যতম কারণ শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়া, ভিটামিন ডি বা রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি’র অভাব ইত্যাদি।”

“এছাড়াও নিয়মিত দাঁত ও মুখগহ্বর পরিষ্কার না করা, খাবারে এলার্জি, অতিরিক্ত অম্লীয় কিংবা ঝাল খাবার খাওয়া, জিহ্বা বা গালের ভেতরের অংশ কামড়ে ফেলা ইত্যাদি কারণেও এটি হতে পারে।” বললের ডা. কামরুল।

তিনি আরও জানান, অনেক সময় বাত, এইচআইভি, পাকস্থলিতে প্রদাহ ইত্যাদি কারণ থেকেও এই ধরনের ঘা হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মুখের ভেতরে ঘা বা আলসার হলে ওষুধের পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু সাধারণ টোটকাতেও উপকার পাওয়া যায়।

- হালকা গরম পানিতে খানিকটা লবণ বা বেইকিং সোডা গুলিয়ে কুলিকুচি করতে হবে। দিনে দুতিনবার এভাবে কুলিকুচি করলে আরাম পাওয়া যাবে।

ডা. কামরুল বলেন, “গরম পানি মুখে প্রদাহ জনিত ব্যথায় বেশ উপকারি। তাছাড়া ব্যাক্টেরিয়া রোধে গরম পানি এবং লবণ বা সোডা ভালো কাজ করে। তাই মুখে ঘা হলে গরম পানি নিয়ে কুলিকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।”

- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যুক্ত ফলমূল খেতে হবে।

- নারিকেলের দুধ দিয়ে দিনে দুতিনবার কুলিকুচি করলে মুখ জীবাণুমুক্ত থাকবে।

- আলসার সারাতে চার’পাঁচটি তুলসি পাতা চিবিয়ে পানি পান করতে পারেন।

- মেথি পাতা সিদ্ধ করা পানি দিয়ে দিনে দুতিনবার কুলিকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।

- মুখের ঘা সারাতে টমেটো বেশ উপকারী।

- চুইংগাম বা চুষে খাওয়ার চকলেট এড়িয়ে চলতে হবে।

- ঘায়ের উপর গ্লিসারিন দিলে উপকার পাওয়া যায়। গ্লিসারিনের সঙ্গে এক চিমটি হলুদগুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করলে আরও ভালো।

- চা, কফি ইত্যাদি পানীয় পরিহার করতে হবে।

- টক দই খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

- কাচাপেঁয়াজ খেলে উপকার পাওয়া যায়। কারণ এতে থাকে প্রচুর সালফার যা ঘা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

- শক্ত, গরম, অতিরিক্ত ঝাল এবং অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

- নরম ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজার অভ্যাস করতে হবে।

- ঘায়ের উপর টুথপেস্ট লাগাতে পারেন।

এই ঘরোয়া পন্থাগুলো অনুসরণ করলে ঘায়ের ব্যথা কিছুটা কমবে।

তাছাড়া অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল মাউথ ওয়াস ও নিকোনাজল-জাতীয় ওষুধ লাগানোর পরামর্শ দেন ডা. কামরুল।

তবে বেশি সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।