বসেছিল পাখির মেলা

সকালের হতে না হতেই শুরু হয়ে গেছে ওদের কিচির-মিচির। ওদের নেই কোনো পড়ার চাপ, নেই কোনো ছুটির চিন্তা। কেবল খেলা আর খেলা। কিন্তু এই খেলতে খেলতে ওরা শিখে যাবে অনেক কিছু। এমনটাই চাওয়া ছিল আয়োজক আকিমুদ্দিন গ্রন্থাগারের। 

>> শর্মিলা সিনড্রেলাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2014, 07:19 AM
Updated : 16 June 2014, 07:19 AM

একটা গ্লাসভর্তি পানি। পারবে একটুও পানি না ফেলে সেটা পুরো উল্টে দিতে? পারবে না তো! এবার যদি বলি তোমাকে এক টুকরা কাগজ দেওয়া হবে, এবার কী পারবে? ওরা কিন্তু ঠিকই পেরেছিল। ওরা মানে চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার জমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছোট্ট সোনামুনিরা।

সেদিন ওদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল দ্বিতীয় শিশু বিজ্ঞানমেলা। আকিমুদ্দিন গ্রন্থাগারের আয়োজনে এবং এসইএল-এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুল আউয়ালের সহযোগিতায় জমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বসেছিল এই আসর।

২০০৮ সালের ৪ মে গড়ে ওঠে আকিমুদ্দিন গ্রন্থাগার। এবার গ্রন্থাগারের ৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৯ ও ২০ মে এই খেলার আয়োজন করা হয়।

১৯ মে সন্ধ্যা থেকেই ছিল টেলিস্কোপে চাঁদ দেখার সুযোগ।

কিন্তু প্রকৃতি বিরূপ বলে আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পরের দিন জম্পেশ খেলাধুলা।

চুলে চিরুনি দিয়ে আঁচড়ালে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। তখন সেটা দিয়ে ছোট ছোট কাগজ তুলে নেওয়া যায় অনায়াসে।

ডিমটা সেদ্ধ নাকি কাঁচা সেটাও বলে দেওয়া সম্ভব ডিম না ফাটিয়েই, ডিম ঘুরিয়েই তা বলা সম্ভব। এসব খেলা নিয়ে সারাদিন হইচই করেছিল আমাদের আগামীদিনের জগদীশচন্দ্র-মেঘনাদ সাহারা।

প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল বর্ণ পরিচয় প্রতিযোগিতা। প্রতিবন্ধী সুলেখা হাঁটতে পারে না তাতে কী, খেলা তো আর মিস করা যায় না। তাই অন্যের কাঁধে ভর দিয়ে সে ঠিকই দৌড়েছিল বর্ণটি চিনে নিতে।

আকিমুদ্দিন গ্রন্থাগারের সহ-উদ্যোক্তা ও বিজ্ঞানকর্মী জাহাঙ্গীর সুর বলেন, “ওরা এখনও শিশু। ওরা এসব কী করে ঘটছে তার কিছুই বুঝবে না, তা ঠিক; কিন্তু ওদের মনে নিশ্চয়ই একটা প্রশ্ন তৈরি হবে। হয়ত বড় হয়ে সে সেটার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবে। একজন করলেও সেটাই আমাদের প্রাপ্তি।”

আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম।

তিনি বলেন “তাত্ত্বিক জ্ঞানের চেয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান শিশুদের বেশি কাজে আসে। বইতে ওরা যা পড়বে, তা যদি খেলতে খেলতে শেখে তাহলে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে। এসব খেলা খুবই মজার ছিল। এর আগে আকিমুদ্দিন গ্রন্থাগার থেকে প্রাথমিক স্কুলে যে তিনজন শিক্ষক দেওয়া হয়েছে তারাও স্কুলে বেশ সহযোগিতা করছে। সব মিলিয়ে খুব ভালো উদ্যোগ।”

ছবি: মাহফুজ রহমান