কখনও কখনও একটা হাসি পুরোটা দিনকে উজ্জ্বল করে দিতে পারে। এ কথাটা হয়তো তোমরা সবাই শুনেছো। তবে এর মানে বেশ গভীর। একটা হাসিমুখের জন্যই আমরা সব ধরণের চেষ্টা করি। যেমন ধরো, সকাল সকাল উঠে পড়তে বসে যাওয়া, যেন মা-বাবা আমাদের উপর খুশি থাকেন। আবার মা-বাবাও সারাদিন কত কষ্ট করেন যেন আমরা হাসিখুশি থাকতে পারি। হাসিমুখ দেখলে, সব কিছু ভালো লাগতে থাকে।
হয়তো আজ কারও দিনটা খারাপ ছিল, ছোট্ট একটা হাসি তাকে বেশ প্রশান্তি দিয়ে দিল। এভাবে কারও সাথে দেখা হলে ছোট একটা হাসি, একটু কথা বলা, অথবা কাউকে একটু সাহায্য করার মাধ্যমে নিজের আসে পাশে আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়াই যায়।
সবাই যেন এভাবে হাসি আর ভালোবাসা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারে সে লক্ষ্যে অক্টোবর মাসের প্রথম শুক্রবার পালন করা হয় বিশ্ব হাসি দিবস উপলক্ষে। আমাদের ভাষায় হাসি বলতে সব রকম হাসিই বোঝায় তবে ইংরেজি ভাষায় হাসি নানান রকমের হয়, যেমন মৃদু হাসির ইংরেজি হল smile, হা হা করে হাসির ইংরেজি laugh. যেহেতু এ বছর আজই অক্টোবর মাসের প্রথম শুক্রবার তাই আজ হল বিশ্ব হাসি দিবস। তবে এ হাসি হল মৃদু হাসি বা মুচকি হাসির দিন ইংরেজিতে যাকে বলে smile আর কি! হাসিটা ছোট তবে, এ ছোট্ট হাসিটা বলে দেয় আমাদের সাথে সবকিছু ঠিকঠাক আছে। আর আমরা মন থেকে অন্যের ভালো চাচ্ছি।
এখন মনে তো প্রশ্ন আসছেই এই হাসি দিবস কোথা থেকে এলো?
সে এক মজার ইতিহাস। একটা হলুদ রঙের বৃত্তের মধ্যে দুটো চোখ আর একটা অর্ধচন্দ্রাকৃতির মুখের ছবি তোমরা সবাই দেখেছো। শুধু দুটো বন্ধু আর একটা বক্র রেখা দিয়ে শিল্পী কী সুন্দর করে একটা হাসি মুখ এঁকে ফেলেছেন।
হারভে বেল হচ্ছেন সেই শিল্পী যিনি ২৯৬৩ সালে বৃত্তের মধ্যে এই হাসি মুখটা প্রথম এঁকেছিলেন। যেটাকে আমরা স্মাইলি বলে চিনি। এখন এই হাসি মুখের প্রতীকটা এতই জনপ্রিয় যে দেওয়ালের ছবি থেকে আধুনিক ইমোজি সবখানেই এর ব্যবহার হয়ে আসছে।
হাসি দিবসের দুই বছর না পেরুতেই একটা দুঃখের ঘটনা ঘটে যায়। হাসি দিবসের প্রবর্তক হারভে বেল মারা যান। সালটা ছিল ২০০১। তবে মারা যাওয়ার আগে বেল কাজের কাজটা ঠিকই করে রেখে যান। তিনি নিজের নামে একটি ফাউন্ডেশন তৈরি করে ফেলেন। যাদের কাজ হল তাঁর কথাগুলোকে মানুষকে জানানো। আজকে তোমরা যারা ছোট ছোট তাদের অনেকের ২০০১ সালে জন্মই হয়নি। ফাউন্ডেশন তাদের কাছ পর্যন্ত এই হাসি দিবসের উদ্দেশ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে।
সেই উদ্দেশ্যগুলো খুব মজার মজার। যেমন তুমি কাউকে অল্প একটু সাহায্য করার মধ্যমে তাঁর দিনটাকে সুন্দর করে দিতে পারো। এটাই হাসির শক্তি। প্রত্যেকে একে অন্যকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করলে পৃথিবীটা কতই না সুন্দর জায়গা হয়ে যাবে বলো তো!
এত সুন্দর দিনটাকে তাহলে কীভাবে উৎযাপন করা যায়?
আজকের এই সুন্দর দিনটাকে উৎযাপন করতে হলে একদম চোখ কান খোলা রাখতে হবে। খুব ভালো করে আশেপাশের মানুষদের দেখতে হবে। তাদের বুঝতে হবে, আর চেষ্টা করতে হবে আজকের দিনে যেন তাদের মুখে হাসি ফোটে।
এর জন্য সবার প্রতি একটু যত্নশীল হতে হবে। যেমন আজ তুমি মাকে তাঁর কাজে সাহায্য করতে পারো। ধরো, নিজের জামা কাপড় গুছিয়ে রাখার সময় ভাই বা বোনেরটাও গুছিয়ে ফেললে। অথবা বইগুলো গুছিয়ে দিলে। শুধু যে মানুষকেই খুশি করতে হবে তাও কিন্তু নয়। চাইলে অন্য প্রাণীকে, পাখি এমনকি একটা গাছকেই খুশি করে দেখো। কত্ত খুশি চারিদিকে উপচে উঠে।