কুংফু পান্ডা

কুংফু পান্ডা নামটা শুনলেই অবাক লাগে, তাই না? পান্ডা তো চুপচাপ মোটাসোটা একটি প্রাণী, সে আবার কুংফু’র লাফ ঝাপ কেমন করে দেয়! কিন্তু সবই সম্ভব হয়েছে কুংফু পান্ডা এনিমেশন সিনেমাটিতে। এসো এই সিনেমাটি নিয়ে কিছু কথা জেনে নেয়া যাক।

নাজিয়া প্রভাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2015, 09:14 AM
Updated : 15 Nov 2015, 09:14 AM

সিনেমাটি শুরু হয় পু নামের খুব মোটা, অলস, স্বপ্নে বাস করা একটি পান্ডাকে নিয়ে। পু এতই অলস যে তার নিজের বিছানা ছেড়ে উঠতেই কষ্ট হয়। পুয়ের বাবার একটি রেস্তোরাঁ আছে, যার নুডলসের খুব বিখ্যাত। পু তার বাবার সেই রেস্তোরাঁতে কাজ করে। গল্পের এই পর্যায়ে তোমাদের একটা খটকা লাগবে। কারণ পু এর বাবা মি. পিং হলো একটি হাঁস। মোটু পান্ডার বাবা কি করে একটি সরু হাঁস হয় সে রহস্য তোমাকে বেশ ভাবাবে। তা সে যাই হোক। পু আসলে দেখতেও তার বাবার মতো নয় কাজও তার বাবার মতো নয়। তবে তাদের একটা বিষয়ে খুব মিল আছে। ওরা দুইজনই একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসে।

পু যেই গ্রামে থাকে সেখানে আছে একটি শান্তিময় উপত্যকা। একটি প্রাচীন মন্দিরকে ঘিরে সেই উপত্যকা। সেই মন্দিরে পৌঁছুতে হলে পার হতে হয় অসংখ্য সিঁড়ি। মন্দিরটি আসলে কুংফু শিক্ষার বিদ্যাপীঠ। প্রচীনকাল থেকে সেখানে কুংফুর চর্চা হয়। এই কুংফুর মাস্টারটাই উপত্যকার শান্তি বজায় থাকে। সেই মন্দিরকে নিয়ে আছে নানান গল্প এবং ঘটনা। যেমন সেখানে তাইলাং নামের একজন শিক্ষার্থী ছিলো। সবাই বলতো তাইলাং অনেক বড় মাস্টার হবে। এমনকি সর্বোচ্চ খেতাব ড্রাগন ওয়ারিয়র পেয়ে যতে পারে। তবে তাইলাং-এর মধ্যে অশুভ শক্তির বিকাশও ঘটে। সে অন্যের অনিষ্ট করা শুরু করে তাই ওকে বন্দি করা হয়। তাইলাং এর পরেকে হবে ড্রাগন ওয়ারিয়র এটি নিয়ে বেশ গুঞ্জন রটে যায়। ধারণা করা হচ্ছে এখনকার সবচেয়ে যোগ্য পাঁচজন ওয়ারিয়র যাদের সবাই ফিউরিয়াস ফাইভ নামে চিনে তাদের কোনো একজন হবে। পু আবার এই পাঁচজনের বিশাল ফ্যান।

সেই ড্রাগন ওয়ারিয়র বাছাই করার অনুষ্ঠান উপলক্ষে গ্রামে সাজ-সাজ রব পড়ে যায়। পু এর খুব ইচ্ছা ও সামনাসামনি বসে সেই বাছাই পর্ব দেখবে কারণ পুও কুংফু খুব ভালোবাসে। তবে বললেই কি আর সেই মন্দিরে চলে যাওয়া যায়? একে তো বিশাল শরীর নিয়ে অতগুলো সিঁড়ি পার হয়ে ওঠা, তার উপর আবার তার বাবা তাকে দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে নুডলস বিক্রি করতে। কী আর করা? ইচ্ছা না হলেও নুডলসের ট্রলি নিয়ে সে রওনা হয়ে যায় মন্দিরের দিকে। সকলে একে একে পুকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যায় কিন্তু পু তার বিশাল শরীর আর বোঝা নিয়ে এগুতে পারে না। যখন সে গিয়ে উপরে পৌঁছায় ততক্ষণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে গেইট এবং শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিযোগিতা।

পু এর পছন্দের কুংফু প্রতিযোগীরা আছে আর পু দেখতে পাবে না। তা তো হয় না। পু নানা রকমভাবে চেষ্টা করতে থাকে ভিতরে যাবার, কিন্তু শেষমেষ সে গিয়ে পড়ে একদম প্রতিযোগিতার মাঝখানে। এবং মন্দিরের গুরু প্রাচীন কচ্ছপ পুকেই নির্বাচন করে বসেন ড্রাগন ওয়ারিয়র হিসেবে।

এরপর শুরু হয় পু এর প্রশিক্ষণ, মাস্টার শিফুর কাছে এবং পু এতদিন যাদের ভক্ত ছিলো; টাইগ্রেস, মাঙ্কি, ম্যান্টিস, ভাইপার এবং ক্রেন, তাদের সঙ্গে থাকার। মোটা অলস পুয়ের উপর সবাই বিরক্ত। এদিকে কারাগার ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসে তাইলাং। সে হুমকি দেয় যে সে আসছে এবং ছিনিয়ে নেবে সেই মন্ত্র যা রয়েছে শুধুমাত্র ড্রাগন ওয়ারিয়রের জন্য। নির্বাচিত ড্রাগন ওয়ারিয়র হিসেবে পুয়ের ওপর দায়িত্ব পড়ে তাইলাং কে ঠেকানোর। কিন্তু মোটা অলস পু কীভাবে এই কঠিন কাজটা করবে? তা জানতে হলে দেখতে হবে কুংফু পান্ডা ১ সিনেমাটি।

ড্রিম ওয়ার্কস এর এই সিনেমাটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন জ্যাক ব্ল্যাক, জ্যাকি চ্যান, এঞ্জেলিনা জোলি র মতো বিখ্যাত অভিনেতারা। একজন সাধারণ মানুষ থেকে নিজের ভিতরের গুণকে চিনে কীভাবে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায় তা খুব সুন্দর করে দেখানো হয়েছে সিনেমাটিতে। এছাড়াও সৎপথ এবং শান্ত মন সাফল্যের জন্য কতোটা জরুরী তাও দেখানো হয়েছে খুব সুন্দর করে। এসবের সঙ্গে রয়েছে কিছু অসাধারণ একশন দৃশ্য। হাস্যরসের ও কমতি নেই। তাই সময় করে দেখে নিতে পারো কুংফু পান্ডা সিনেমাটি।