জুতোর মধ্যে বাগান

তোমাদের পা যখন বড় হয়ে যায় আর সুন্দর সুন্দর জুতোগুলো যখন ছোট ছোট মনে হয় তখন তোমরা কী করো? জুতোগুলো ফেলে দাও অথবা কাউকে দিয়ে দাও তারপরে খুব মন খারাপ করো। মন খারাপ হবেই বা না কেন? পছন্দের জুতো চোখের সামনে থেকে চলে গেলে কার না মন খারাপ হয়?

>>মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2015, 02:19 PM
Updated : 6 Oct 2016, 00:13 AM

তুমি যদি কাউকে পরতে দাও তাহলে সেও যখন আর পরতে পারে না জুতোটা ফেলে দেয়। আমাদের কাছে বিষয়টা শুধুই মন খারাপের, কিন্তু পৃথিবী যদি তোমার মতো কথা বলতে পারতো তবে সে অবশ্যই তোমাকে বলতো, এটা তার জন্য কত কষ্টের। আমাদের ফেলে দেওয়া জুতো এবং অন্য সকল আবর্জনার সঙ্গে মাটিতে যায় অথবা পানিতে যায়। জুতো যেহেতু পানিরোধী পদার্থ দিয়ে গঠিত তাই আমাদের জুতোগুলো পচে মাটির সঙ্গে মিশতে প্রায় শত বছর লেগে যায়। এই শত বছর পৃথিবীর বুকে ক্ষত হয়ে বসে থাকে জুতোগুলো। কারণ হয় পরিবেশ দূষণের এবং আমন্ত্রণ জানায় পরিবেশ বিপর্যয়কে।

তোমরা হয়তো ভাবতে পারো এত বড় ঘটনায় রোধ করার জন্য তোমরা অনেক ছোট। কিন্তু জানো কি, ছোট ছোট সব পদক্ষেপগুলো মিলেই বড় একটা পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। আজকে আমরা শিখবো এই ফেলে দেওয়া জুতোগুলোকে কীভাবে একটু ব্যবহার করে একটু মাটিতে মিশার উপযোগী করা যায়। সঙ্গে সঙ্গে এই জুতোগুলোকে আমরা অক্সিজেন তৈরির মেশিনও বানিয়ে ফেলবো। কীভাবে? চলো দেখে নেই—

আমাদের যা যা লাগবে—

১। ফেলে দেওয়া পুরাতন জুতো (যে কোনো জুতো) 

২। মাটি

৩। গোবর সার

৪। নিড়ানি

৫। যে কোনো ছোট বিরুৎ জাতীয় গাছ

যেভাবে করবো—

পুরাতন জুতোগুলোর ভিতরে মাটি আর সার ঢুকিয়ে আমরা আসলে এগুলো গাছ লাগানোর পাত্র হিসেবে ব্যবহার করবো। সবার প্রথমে মাটির সঙ্গে কিছুটা গোবর সার নিড়ানি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিবো এবং মাটির শক্ত ঢেলাগুলো ভেঙ্গে গুঁড়ো গুঁড়ো করে নিবো। মাটি এবং সার মিশানো হয়ে গেলে আমাদের ফেলে দেওয়া জুতোয় মাটির মিশ্রণ ভরে দিবো। তবে জুতো পুরোপুরি মাটি দিয়ে ভরা যাবে না গাছের জন্য কিছু জায়গা রাখতে হবে। এবার যে কোনো একটি বা বিরুৎ জাতীয় গাছ রোপণ করবো। এ ক্ষেত্রে তোমরা প্যান্সি, এ্যান্থরিয়াম ইত্যাদি গাছের চারা নিতে পারো। সামনেই শীতকাল আসছে চাইলে তোমরা স্ট্রবেরির চারাও নিতে পারো। তোমাদের ছোট্ট জুতোয় অনায়াসে এই গাছগুলো বেঁচে থাকতে পারবে। গাছ রোপণ হয়ে গেলে এর গোঁড়ায় একটু পানি দিবো। এই গাছগুলোকে আমরা জানালার পাশে, বারান্দায়, বাসার ছাদে, সিঁড়ির কিনারায় রাখতে পারি। শুধু নিশ্চিত করতে হবে গাছগুলো যেন নিয়মিত পানি এবং সূর্যের আলো পায়।

এভাবে জুতোর মধ্যে গাছগুলো বেঁচে থেকে তোমাকে ফুল ফল ও অক্সিজেন দিয়ে যাবে পাশাপাশি জুতোগুলো দ্রুত ক্ষয়ে যাবে ফলে মাটি এবং পানিকে দূষিত করার সুযোগ পাবে না।