মীনাজী - ধরমের বিরহকাব্য

পৃথিবীতে রূপের সঙ্গে অনেকখানি দুঃখ জড়ানো থাকে। অতুলনীয় রূপ নিয়েও এক প্রেমহীন হাহাকারময় জীবন যাপন করে সে কথাটাই হয়তো প্রমাণ করে গিয়েছিলেন হিন্দি সিনেমার অন্যতম সেরা অভিনেত্রী ও কবি মীনা কুমারী।

শান্তা মারিয়াবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2015, 07:43 AM
Updated : 6 Jan 2015, 07:34 PM

তার জীবনে সুযোগ সন্ধানী পুরুষের অভাব ছিল না।কিন্তু তিনি যেমন প্রেম চেয়েছিলেন তেমন হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা তাকে কেউ উপহার দিতে পারেনি। তাই প্রেমতৃষ্ণা নিয়ে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে জীবনের কাছ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল তাকে।

নায়ক ধর্মেন্দ্র ও নায়িকা মীনা কুমারীর প্রেমকাহিনি বলিউডের বিষাদময় প্রেমগাঁথাগুলোর অন্যতম।

মীনা কুমারীর জন্ম ১৯৩২ সালের ১লা অগাস্ট এক মুসলিম পরিবারে। বাবা আলি বক্শ ছিলেন শিয়া মুসলমান। মায়ের নাম ইকবাল বেগম। আলি বক্শ থিয়েটারে হারমোনিয়াম বাজাতেন, গান শেখাতেন এবং উর্দু কবিতা লিখতেন। চলচ্চিত্রে জুনিয়র আর্টিস্ট ছিলেন তিনি। ইকবাল বেগম বিয়ের আগে থিয়েটার অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী ছিলেন। মঞ্চে তার নাম ছিল কামিনী। কলকাতার বিখ্যাত ঠাকুরবাড়ির সঙ্গেও কোনো এক সূত্রে সম্পর্কিত ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন আলি বকশের দ্বিতীয় স্ত্রী।

মীনা কুমারীর যখন জন্ম হয় তখন তারা বাবা-মা এতই দরিদ্র ছিলেন যে চিকিৎসকের বিল মেটাতে পারেননি। তার বাবা নবজাতককে একটি মুসলিম এতিমখানায় দিয়ে দেন। অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পর তাকে আবার সেখান থেকে উদ্ধার করেন। তার পারিবারিক নাম ছিল মেহেজাবিন বানু।

মাত্র সাত বছর বয়সে বেবি মীনা নাম দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করতে হয় তাকে।অভিনয় করার মোটেই ইচ্ছা ছিল না তার। শিশু মেহেজাবিন স্কুলে যেতে চেয়েছিল অন্য শিশুদের মতো, চিৎকার করে কাঁদতেন লেখাপড়া শেখার জন্য। কিন্তু মা তাকে একরকম জোর করে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে বাধ্য করেন। পরিবারের মূল উপার্জনকারী তখন হয়ে ওঠে বেবি মীনা।

বয়ঃসন্ধিতে মীনা কুমারী নামে নায়িকার ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। রূপ এবং অভিনয় প্রতিভায় খুব তাড়াতাড়ি খ্যাতি পান তিনি। ‘বীর ঘটোৎকোচ’(১৯৪৯), ‘শ্রী গণেষ মহিমা’(১৯৫০) এবং ‘আলাদিন অ্যান্ড দ্য ওয়ান্ডারফুল ল্যাম্প’(১৯৫২)-এর মতো পৌরাণিক ও রূপকথাভিত্তিক চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে তার জনপ্রিয়তার সূচনা হয়।

১৯৫২ তে মুক্তি পায় ভারতভূষণ ও মীনা কুমারী অভিনীত ‘বৈজু বাওরা’। এটি হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ধ্রুপদী সিনেমাগুলোর একটি। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ফিল্ম ফেয়ার আসরে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন মীনা।

১৯৫২ সালেই তার সঙ্গে খ্যাতনামা পরিচালক কামাল আমরোহির পরিচয় হয়। মীনা কুমারির বয়স তখন মাত্র ২০ বছর। কামাল আমরোহি ছিলেন তার চেয়ে ১৫ বছরের বড়। তিন সন্তানের জনক বিবাহিত কামাল আমরোহির প্রেমে পড়েন মীনা এবং সে বছরই বিয়ে হয় তাদের। দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে কোনো সন্তান হোক তা চাননি কামাল এবং ভালোবাসার জন্য নয়,  উঠতি নায়িকা মীনাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন নিত্য নতুন সিনেমা বানাবেন বলে।

অন্যদিকে মীনা কুমারীর পরিবারের লোকেরা এ বিয়েতে দারুণ অখুশি হয় রোজগেরে মেয়েটি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে। অবশ্য বিয়ের পরও পরিবারকে নিয়মিত টাকা দিতেন মীনা।

স্বামীর কাছ থেকে যে ভালোবাসা চেয়েছিলেন তা পাননি বলে মীনা কুমারীর মনে ক্ষোভ জমা হতে থাকে। তবে এ সময় তার অভিনীত ছবিগুলো দারুণ ব্যবসায়িক সাফল্য পায়। তার অভিনয়ও প্রশংসিত হয়। ‘পরিণীতা’(১৯৫৩)তে ললিতার ভূমিকায় শেখররূপী অশোক কুমারের বিপরীতে তার অভিনয় ছিল অসাধারণ। এ জন্য ফিল্ম ফেয়ারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান তিনি। ‘দায়রা’, ‘এক হি রাস্তা’, ‘সারদা’, ‘দিল আপনা অউর প্রীত পারায়া’, ‘আজাদ’, ‘কোহিনূর’সহ অনেক হিট ছবি উপহার দেন তিনি। নির্মাতাদের পছন্দের তালিকায় পহেলা নম্বরেই ছিলেন মীনা কুমারী। বিয়োগান্তক চরিত্রেই তার জনপ্রিয়তা ছিল বেশি। ট্র্যাজিডি কুইন উপাধি জোটে তার।

কবি হিসেবেও তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। যদিও স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাননি তিনি, কিন্তু নিজের উদ্যোগে শিখেছিলেন লেখাপড়া। কবিতা লিখতেন। তার কবিতা পাঠক মহলে সমাদৃত হতো।

১৯৬২ সালে ‘সাহেব বিবি আউর গোলাম’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। বিমল মিত্রের ‘সাহেব বিবি গোলাম’ উপন্যাস অবলম্বনে গুরু দত্ত প্রযোজিত এ ছবিতে ছোট বৌঠানের ভূমিকায় তার অভিনয় এখনও হিন্দি ছবির ইতিহাসে ক্ল্যাসিক বলে ধরা হয়। এ ছবিতে স্বামীর মন জোগানোর জন্য মদ্যপানে আসক্ত জমিদারবাড়ির কূলবধূর চরিত্রে তিনি অনন্য অভিনয় করেন।আবার ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। সে বছর ‘আরতি’ সিনেমাতেও অসাধারণ অভিনয় করেন তিনি।

১৯৬২ সালে তিনটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার আসরে তিনটি মনোনয়ন পেয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি।মীনা কুমারী চার বার সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এবং আটবার মনোনয়ন পান।

ক্যারিয়ারে সাফল্যের শিখরে পৌছালেও দাম্পত্য জীবনে কামাল আমরোহির সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে। ১৯৫৬ সালে কামাল আমরোহি মীনা কুমারীকে প্রধান চরিত্রে রেখে একটি সিনেমার পরিকল্পনা করেন। ‘পাকিজা’ নামের এ ছবিটি কামাল আমরোহির সেরা কাজ বলে মনে করা হয়। অশোক কুমারকে নায়ক করে ছবির কাজ শুরুও হয়ে যায়। কিন্তু ৬৪ সালে মীনা-আমরোহির দাম্পত্যে চিড় ধরে। তারা বিছিন্ন হয়ে যান। সে কারণে ‘পাকিজা’ অসমাপ্ত রয়ে যায়।

এ সময় মীনা কুমারী হতাশা থেকে মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে তার জীবনে নিত্য নতুন তরুণের আনাগোনা শুরু হয়। তিনি তরুণ ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে থাকেন একের পর এক। তরুণদের সঙ্গে স্বল্পস্থায়ী প্রেম তার একটি খেলায় পরিণত হয়।

জীবনের এই পর্বেই তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে ধর্মেন্দ্রর।ধর্মেন্দ্র তখন পাঞ্জাব থেকে সদ্য আগত এক তরুণ। সুগঠিত দেহের অধিকারী সুদর্শন ধর্মেন্দ্র বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন ১৯ বছর বয়সে পারিবারিক চাপে। তার স্ত্রী প্রকাশ কউর থাকতেন পাঞ্জাবে। চলচ্চিত্রভুবনে তার কোনো আত্মীয় পরিজন ছিল না। ফলে তাকে সুযোগ দেওয়ারও তেমন কেউ নেই। প্রথম ছবিটি ব্যর্থ হওয়ায় চলচ্চিত্রে তার কোনো আশা ভরসাই নেই তখন। এই সময় মীনা কুমারীর নজরে পড়েন তিনি। দুজনে একসঙ্গে অভিনয় করেন ‘পূর্ণিমা’ সিনেমায়। মীনা কুমারী এই অনভিজ্ঞ তরুণকে অভিনয় শেখানো শুরু করেন এবং প্রায় হাতে ধরেই তাকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করেন।

তার জীবনে ধর্মেন্দ্র বয়ে আনেন ভালোবাসার সুবাতাস। আবেগপ্রবণ কবি মীনা কুমারী তীব্রভাবে ভালোবেসে ফেলেন তাকে। তাকে তিনি ‘ধরম’ বলে ডাকতেন। তাকে প্রতিদিন না দেখলে অস্থির হয়ে পড়তেন। তার এই ভালোবাসা ছিল যেমন সুতীব্র তেমনি নিখাঁদ।

অন্যদিকে ধর্মেন্দ্রও তার ‘মীনাজি’কে ভালোবাসতেন তবে সে ভালোবাসায় স্বার্থের ভাগটাই বেশি ছিল। মীনা কুমারীর বাড়ি ‘জানকী কুটির’-এ তিনি ছিলেন প্রতি সন্ধ্যার অতিথি। তীব্র, আবেগময় এক সম্পর্কে মগ্ন ছিলেন তারা। হিন্দি সিনেপাড়ার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, পিকনিক, প্রিমিয়ারে তার একসঙ্গে যেতেন। ‘ধরমের’ প্রতি প্রকাশ্যে আবেগ দেখাতে কুণ্ঠিত হতেন না ‘মীনাজি’।

প্রেমে, আনন্দে, আবেগে, আলাপে, সংগীতে, কবিতায় অনেক রাত তারা পার করেছেন জানকী কুটিরে। প্রায় তিন বছর ধরে ভালোবাসায় মগ্ন থাকেন তারা। মীনার মদ্যপানের বাড়াবাড়িকে পছন্দ করতেন না ধর্মেন্দ্র। তিনি তাকে এ থেকে বিরত রাখার অনেক চেষ্টা করেন। কিছুটা সফলও হন। মীনা যেমন ‘ধরম’ ছাড়া আর কিছু বুঝতে চাইতেন না, তেমনি ‘মীনাজি’র প্রতি বিশ্বস্ত ও প্রেমময় ছিলেন ধর্মেন্দ্র।

একসঙ্গে ‘পূর্ণিমা’,‘কাজল’, ‘ফুল আউর পাথ্থর’, ‘চন্দন কা পালনা’সহ কয়েকটি সফল সিনেমা করেন এই জুটি। মীনা কুমারীর অ্যালকোহল আসক্তি তার চেহারা ও স্বাস্থ্য নষ্ট করে দিচ্ছিল। ফলে তার ক্যারিয়ার কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্যদিকে ধর্মেন্দ্র ক্রমেই ব্যস্ত হয়ে পড়ছিলেন অভিনয়ে। ফলে তিনি আর আগের মতো সময় দিতে পারছিলেন না তার প্রেমিকাকে। দুজনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে। অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ মীনা কুমারী এই দূরত্ব ঘোচাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তিনি ভাবেন ‘ধরমের’ মনে যদি ঈর্ষার আগুন জ্বালানো যায় তাহলে হয়তো আগের সেই আবেগের তীব্রতা ফিরে আসবে।

ধর্মেন্দ্র সিনেমার কাজে মুম্বাইয়ের বাইরে যান কিছুদিনের জন্য। মীনা মনে করেন এটা অবহেলা। তিনি রাহুল নামে এক তরুণকে নিয়ে সময় কাটাতে থাকেন আর আশা করেন ধর্মেন্দ্র ফিরে এসে এই ছেলেটিকে দেখে ঈর্ষাকাতর হবে।

ধর্মেন্দ্র মুম্বাই ফিরে এসে যখন মীনা কুমারীর সঙ্গে রাহুলের প্রেম মতান্তরে বিয়ের গুজব শোনেন তখন তীব্র গতিতে ছুটে আসেন ঠিকই। জানকী কুটিরে পৌঁছে রাগে ফেটে পড়েন তিনি। তিনি মীনাকে প্রশ্ন করেন রাহুল নামে কেউ তার জীবনে এসেছে কি না। মীনা শুধু বলেন কথাটি সত্যি। কিন্তু তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করার আগেই ধর্মেন্দ্র জানকী কুটির থেকে ছুটে বেরিয়ে যান। সেই দিনই মীনার সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করেন তিনি চিরতরে।

মীনা কুমারী এ ঘটনায় বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বনটুকুও হারিয়ে ফেলেন। মদে ডুবে যান তিনি। তার লিভার দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হন। এ সময় যে কবিতাগুলো মীনা লেখেন তা যেমন মর্মস্পর্শী তেমনি শিল্পগুণের দিক দিয়ে সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে দেখতে আসেন কামাল আমরোহি। না, সাবেক স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা জানাতে নয়, ‘পাকিজা’ শেষ করার প্রস্তাব নিয়ে।কারণ ইতোমধ্যেই নার্গিস এবং সুনীল দত্ত তাকে উৎসাহিত করেছিলেন ‘পাকিজা’র মতো অসাধারণ চিত্রনাট্যের ছবিটি সমাপ্ত করার জন্য। মীনা কুমারী কামাল আমরোহির কথায় রাজি হন। চরম অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি ‘পাকিজা’র কাজ করতে থাকেন। অশোক কুমারের পরিবর্তে সালিম চরিত্রে নায়ক হন রাজকুমার। অশোক কুমার ছবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিতে মা ও মেয়ের ভূমিকায় অনবদ্য দ্বৈত অভিনয় করেন মীনা কুমারী। শুরু হওয়ার পনেরো-ষোলো বছর পর শেষ হয় ‘পাকিজা’র কাজ। ছবিটি বলিউডের শতবর্ষের অন্যতম সেরা নির্মাণ হিসেবেই বিবেচিত হয় আজ।

‘পাকিজা’ মুক্তি পায় ১৯৭২ সালে। মীনা কুমারী তখন মৃত্যুশয্যায়। হাসপাতালে নিঃসঙ্গ মীনাকে দেখতে আসেননি কামাল আমরোহি, ধর্মেন্দ্র কিংবা তার গুণগ্রাহীদের কেউ। একমাত্র কবি, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বন্ধু গুলজার তাকে কিছুটা সাহচর্য দেন। মীনা কুমারী সে সময় কপর্দকশুন্য। হাসপাতালের বিল মেটাবার সাধ্যও নেই তার। পরিবারের যে সদস্যরা তার রোজগারে প্রতিপালিত হয়েছে আজীবন, তারাও দূরে সরে রইল টাকা খরচের ভয়ে।

১৯৭২ সালের ৩১শে মার্চ মৃত্যু হলো হিন্দি সিনেমার এই কিংবদন্তি শিল্পীর।তার মৃত্যুর পর যেন তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতেই ভক্তরা ছুটে গেল প্রেক্ষাগৃহে ‘পাকিজা’ দেখার জন্য। প্রকারান্তরে নিজের জীবন দিযে ‘পাকিজা’র বাণিজ্যিক সাফল্য নিশ্চিত করে গেলেন তিনি। চলচ্চিত্রের পর্দায় যেমন বিয়োগান্তক চরিত্রেই বেশি খ্যাতি পেয়েছিলেন এবং উপাধি পেয়েছিলেন ট্র্যাজেডি কুইন, তেমনি জীবনেও তিনি ছিলেন বিষাদের মহানায়িকা।