আগে পড়াশোনা, তারপর বাজেট আলোচনা: ডেপুটি স্পিকার

আগামী অর্থ বছরের বাজেটের ওপর আলোচনার জন্য সংসদ সদস্যদের পড়াশোনা করে প্রস্তুতি নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2015, 12:13 PM
Updated : 30 May 2015, 05:31 PM

একই সঙ্গে সংসদের গ্রন্থাগার ব্যবহার করে তথ্যনির্ভর বাজেট বক্তব্য দেওয়ার জন্যও আইন প্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।

বাজেট অধিবেশন শুরুর আগের সপ্তাহে শনিবার ‘হেয়ারিং ল মেকারস অন বাজেট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় ডেপুটি স্পিকার এই আহ্বান জানান।

ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, “আমি যখন হাউজ প্রিসাইড করব, আপনারা যদি পয়েন্ট মেক করতে পারেন তবে সময় বাড়িয়ে দেব।

“তবে আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, প্রিপারেশন নিয়ে বক্তৃতা দেবেন। উইদাউট প্রিপারেশন বক্তৃতা দেবেন না।”

আগামী ৪ জুন ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এরপর বাজেট পাসের আগ পর্যন্ত সংসদ সদস্যরা প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করবেন।

৩০ জুন বাজেট পাস হবে। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।

সংসদ সদস্যদের ‘বাজেট হেল্প ডেস্ক’ থেকে সহযোগিতা নেওয়ার আহ্বানও জানান ডেপুটি স্পিকার।

সংসদ সদস্যদের গ্রন্থাগার ব্যবহার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন জাতীয় সংসদের লাইব্রেরি কমিটির সভাপতি ফজলে রাব্বী।

তিনি বলেন, “আমাদের লাইব্রেরি ইজ এ ভেরি রিচ লাইব্রেরি। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে আমাদের অনেক মাননীয় সদস্য... কোনও মাননীয় সদস্য এটা ব্যবহার করেন না। এত মাইক্রোস্কোপিক পার্সেন্টেজ লাইব্রেরি ব্যবহার করেন...।

“এখানে অন্য দেশের বাজেটও আছে, সেগুলো দেখেন। স্পেসিফিক প্রশ্ন যখন আপনারা তুলে দেবেন, সঠিক তথ্য দিয়ে বিকল্প ভাবনা দিতে পারেন। অর্থমন্ত্রী না শুনলেও প্রধানমন্ত্রী এটা পয়েন্ট আউট করবেন,” বলেন তিনি।

প্রকল্প বাস্তবায়নে এমপিদের তদারকির সুপারিশ

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া এবং গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত (এডিপি) প্রকল্পগুলো সংসদ সদস্যদের তদারকির সুপারিশ এসেছে।

বাজেট সংক্রান্ত সংবাদ নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছেন এমন দুই জন সাংবাদিককে এই অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হয়।    

অনুষ্ঠানে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদক আবদুর রহিম হারমাছি তার অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরেন।

সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মেগা প্রজেক্টগুলো বাদ দিয়ে এলাকাভিত্তিক যেসব প্রকল্প আছে সেগুলো আপনারা তদারকি করেন। প্রকল্প পরিচালক কী কাজ করছে, বরাদ্দ কতটুকু খরচ হয়েছে, কাজের অগ্রগতি কতটুকু, সেগুলো তদারকি করেন।”

একই সঙ্গে সংসদ সদস্যদের বাজেট অধিবেশনে আলোচনা ‘সত্যিকার’ অর্থে বাজেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেন এই সাংবাদিক।

অনুষ্ঠানের সভাপতি সাবেক প্রধান হুইপ আব্দুস শহীদ ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বীও প্রকল্প তদারকিতে সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণের পক্ষে মত দেন।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, “এই কাজটি করলে প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় কম লাগবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সংসদ সদস্যরা এলাকার উন্নয়নে আরও বেশি কাজ করতে পারবেন।”

আব্দুস শহীদ বলেন, “এই প্রস্তাবটি উল্লেখযোগ্য। এলাকার উন্নয়নে কাজ কীভাবে হচ্ছে তা যদি জনপ্রতিনিধিরা তদারক করেন তবে কাজের স্বচ্ছতা থাকবে।”

বাজেট প্রণয়নে সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর সুপারিশ করেন সাংবাদিক খাজা মাঈনউদ্দিন।

এরপর জাসদের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান বাজেট প্রস্তুতির আগে সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “এমপিরা যদি বাজেট প্রস্তুতিতে অংশ নিতে না পারেন তাহলে জনগণ কিভাবে পারবে? এখানে এমপিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, “বর্তমান সরকার জনবান্ধব। সে জন্যই এই সরকারের বাজেট গণমুখী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সমাজের সকল জনগোষ্ঠীর মানুষের উন্নয়নের চিন্তা করেই বাজেট প্রণয়ন করেন।”

অনুষ্ঠানে ডেভেলপমেন্ট মিডিয়ার সিইও নজরুল ইসলাম মিঠুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী, উম্মে কুলসুম স্মৃতি, উম্মে রাজিয়া কাজল, জাসদের লুৎফা তাহের, স্বতন্ত্র কাজী রোজী, গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মনওয়ার মোস্তফা জলি।