মূল্যস্ফীতি ফের ঊর্ধ্বমুখী

আট মাস স্থিতিশীল থাকার পর অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক মূল্যস্ফীতি ফের ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2015, 10:49 AM
Updated : 10 March 2015, 10:49 AM

পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট (মাসওয়ারি) ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ ছিল।

এর অর্থ হচ্ছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ১০০ টাকায় যে পণ্য বা সেবা পাওয়া যেতো, সেই একই পরিমাণ পণ্য বা সেবার জন্য এখন ১০৬ টাকা ১৪ পয়সা খরচ করতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, মূলত খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বাড়ার কারণে ফেব্রুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ‘সামান্য’ বেড়েছে।

“বছরের শুরুতে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি, ছেলে-মেয়ের স্কুলের খরচসহ অন্যান্য ব্যয় বেশি হওয়ায় নন ফুড মূল্যস্ফীতি একটু বেশি হয়।”

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত আট মাস ধরে মূল্যস্ফীতি নিম্মমুখী ছিল।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

এরপর প্রতি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমতে কমতে গত জানুয়ারিতে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশে নেমে এসেছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে তা ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ২১ শতাংশ, ডিসেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ১১ শতাংশ।

ফেব্রুয়ারি মাসে খাদ্য মূলস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ১১ শতাংশ, জানুয়ারিতে যা ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ ছিল।

আর খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ০১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে।

তবে গড় মূল্যস্ফীতি খানিকটা কমেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

২০১৪ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

আর ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে এই হার ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ ছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক সাংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে খাদ্যমূল্য কম থাকায় মূল্যষ্ফীতি ‘স্বস্তিদায়ক’ অবস্থায় থাকলেও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় যে বিঘ্ন ঘটছে তাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট গত ৫ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে টানা অবরোধ চালিয়ে আসার পাশাপাশি ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে সাপ্তাহিক ছুটি বাদে প্রতিদিন হরতাল চালিয়ে আসছে।

এই হরতাল-অবরোধের মধ্যে সড়কে যানবাহন লক্ষ্য করে ব্যাপক নাশকতা ঘটায় জানুয়ারি মাসে পণ্য পরিবহনে বড় ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়।

মহাসড়কে যাত্রী এবং পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে নিরাপত্তা দিতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও আনসারকেও মাঠে নামায় সরকার।