বেসিক ব্যাংকের ডিএমডি রুহুলের ব্যাংক হিসাব তলব

বেসিক ব্যাংকের বিতর্কিত উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেক সেনা কর্মকর্তা রুহুল আলমের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2015, 05:11 PM
Updated : 5 March 2015, 05:11 PM

মঙ্গলবার তার সব ধরনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রুহুল আলমের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার, অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণে অর্থ উপার্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

কোন ধরনের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল রুহুল আলম বেসিক ব্যাংকে সরাসরি উপ মহাব্যবস্থাপক(ডিজিএম) হিসেবে নিয়োগ পান। ওই পদে চাকরী স্থায়ী হওয়ার আগেই সাত মাসের মাথায় ওই বছরের নভেম্বরে তিনি মহাব্যবস্থাপক (জিএম) হিসেবে পদোন্নতি পান।

নিয়মানুযায়ী, মহাব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতির জন্য উপ মহাব্যবস্থাপক পদে কমপক্ষে তিন বছর এবং কমপক্ষে ১৮ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা থাকতে হয়, যা রুহুল আলমের ক্ষেত্রে লঙ্ঘন করে বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ।

নিয়োগ ও পদোন্নতিতে এ ধরনের অনিয়ম নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালে বেসিক ব্যাংকের ওপর একটি তদন্ত চালায়।

ওই তদন্ত প্রতিবেদনে রুহুল আলমের নিয়োগ ও পদোন্নতিকে বিধিবহির্ভূত হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদকে সংশোধনের পরামর্শ দেয়।

বিষয়টি বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমলে না নিলে অর্থমন্ত্রনালয়কে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরের বছর ডিসেম্বরে রুহুল আলম উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক(ডিএমডি) পদে পদোন্নতি পান।  ওই সময় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু।

তিনি সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের মুখে গত বছর জুনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর সরকার ওই পর্ষদ ভেঙ্গে নতুন পরিচালক নিয়োগ দেয়।

সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া রুহুল আলম আব্দুল হাই বাচ্চুর আজ্ঞাবহ হিসেবে পরিচিত। বাচ্চুর অনুগ্রহেই তিনি এই ব্যাংকে নিয়োগ পান এবং ডিজিএম থেকে মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ডিএমডি হন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।   

এবিষয়ে জানতে চাইলে রুহুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএফআইইউ কেন আমার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাচ্ছে জানি না। আমি কোনো ধরনের অর্থ পাচার বা অবৈধ উপার্জনের সঙ্গে জড়িত নই।”

 বেসিক ব্যাংকের কর্মচারী পরিষদের পক্ষ থেকে গত বছর মে মাসে রাজধানিতে পোস্টারিং করে আব্দুল হাই বাচ্চু, রুহুল আলম ও মো. সেলিম নামের আরেক ডিএমডির পদত্যাগ দাবি করা হয়।

ওই পোস্টারে এই তিনজনকে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎকারী হিসেবে উল্লেখ করে কর্মকর্তারা।