দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্দেহজনক লেনদেনের ঘটনা ধরা পড়া বাড়ছে।
Published : 22 Feb 2015, 06:42 PM
গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ৩০০টির বেশি সন্দেহজনক লেনদেনের প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা পড়েছে।
রোববার মুদ্রা পাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও চোরাচালান প্রতিরোধ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা শাখার (বিএফআইইউ) উপপ্রধান ম. মাহফুজুর রহমান।
বিএফআইইউ মুদ্রা পাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আর্থিক লেনদেনের মনিটরিং করে থাকে।
বিএফআইইউর বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৬১৯টি সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য দেয়।
মাহফুজুর বলেন, সাধারণত মাসে গড়ে ৫০টি সন্দেহজনক লেনদেনের ঘটনা ধরা পড়লেও ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ৩০০টির বেশি রিপোর্ট এসেছে।
এ বিষয়ের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে রিপোর্টিং এজেন্সিগুলো সচেতন হয়েছে। এ কারণে সন্দেহজনক রিপোর্টের সংখ্যা বেড়েছে বলে ধারণা করছি।”
ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে নিবন্ধিত সব প্রতিষ্ঠান, এনজিও ও মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিএফআইইউকে সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট দিয়ে থাকে।
তবে ব্যাংকিং খাত থেকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য এসেছে বলে জানান বিএফআইইউ উপ-প্রধান।
এসব রিপোর্ট বিশ্লেষণের পাশাপাশি ২০ দলের নেতৃত্বে চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেশের যেসব এলাকায় বেশি বেশি সহিংসতা হয়েছে বা হচ্ছে ওইসব এলাকার ব্যাংকগুলোর দৈনন্দিন লেনদেন পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাস্কফোর্স।
মাহফুজুর বলেন, “এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, চলমান সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অর্থায়ন করার ক্ষেত্রে যেন কোনো পক্ষ ব্যাংকিং বা আর্থিক ব্যবস্থা ব্যবহার করতে না পারে।
“টাস্কফোর্সও সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেজন্য টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকেও ব্যাংকগুলোকে বলা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বিশেষ মনিটরিং করার জন্য।”
তবে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের লেনদেনসহ অন্যান্য তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া কাউকে দেবে না।
“এজন্য আমরা স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি যে, ব্যাংকের লেনদেনের তথ্যের দরকার হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে চাইলে তা সংগ্রহ করে দেওয়া হবে।”
চাপাইনবাবগঞ্জে কার্যরত কয়েকটি ব্যাংকের শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক অফিস থেকে ‘চলমান আইন শৃংখলা পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্দেহজনক লেনদেন অবহিতকরণ প্রসঙ্গে’ শিরোনামে ৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিএফআইইউর প্রধান বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পুলিশ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, রাজস্ব বোর্ড, দুদক, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, অর্থ, বাণিজ্য ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।