আগামী সাত বছরের মধ্যে দেশে দারিদ্র্যের হার বর্তমানের অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
Published : 19 Oct 2014, 07:15 PM
রোববার রাজধানীতে ‘দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের ভুমিকা’ বিষয়ে জাতীয় সম্মেলনে বাংলাদেশ দারিদ্র্য ‘বিমোচন’ থেকে ‘উচ্ছেদের’ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেও মতপ্রকাশ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে দারিদ্র্য বেশি দিন চলবে না। এজন্য এখন আর দারিদ্র্য বিমোচন বলতে চাই না, বলতে চাই দারিদ্র্য উচ্ছেদ। সমাজে কিছু লোক থাকবে যাদের সামাজিক সহায়তা দিতে হবে। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক- এদের।
“দেশে বর্তমানে মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ দরিদ্র। আশা করছি ২০২১ সালের মধ্যে এই হার ১৪ থেকে ১৫ শতাংশে নেমে আসবে। দেশ দারিদ্র মুক্ত হতে ২০৩০ সাল লাগবে না। কোন দেশে ১২ থেকে ১৪ শতাংশ লোক দারিদ্র সীমার নীচে থাকলে সে দেশকে আর দরিদ্র বলা যায় না।”
তিনি বলেন, “ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহিতাদের মধ্যে খেলাপি হওয়ার সংস্কৃতি নেই। যদিও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। ক্ষুদ্র ঋণের মাত্র ৫ শতাংশ খেলাপি। ক্ষুদ্র ঋণ যদি উৎপাদন কাজে লাগানো যায় তাহলে গ্রামীণ জীবনে পরিবর্তন আসে।”
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ), পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও ইনস্টিটউট অব মাইক্রোফাইন্যান্স (আইএনএম)।
পিকেএসএফের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডিএফআইডির বাংলাদেশ প্রতিনিধি সারাহ কুক, অর্থনীতিবিদ বাকি খলিলী, আইএনএমের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার মুজাহিদুল হক ও পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম বক্তব্য রাখেন।
“টেকসই উন্নয়নের জন্য মানুষকে মানবিক মর্যাদায় উন্নীত করতে হবে। যার জন্য দরকার সামাজিক পুঁজি গঠনের।”
পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম বলেন, “দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ বিশ্বে যে সাফল্য দেখিয়েছে তাতে ক্ষুদ্র ঋণের অবদান বেশি। পিকেএসএফ ১৭৪ কোটি টাকার ক্ষুদ্র ঋণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে, যার সুবিধাভোগী এক কোটি।”
সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে। এই ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশকে আরও কাজ করে এই ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে কত প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কাজ করছে তার সঠিক হিসেব নেই। তবে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির নিবন্ধন নিয়ে ৭০০ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। তিন কোটি ৩০ লাখ ক্ষুদ্র ঋণগ্রহিতা রয়েছে। আর দরিদ্র মানুষের সংখ্যা চার কোটি।
ক্ষুদ্র ঋণের বর্তমান সমস্যা, অতীতের অর্জন ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নির্ধারণের জন্য এ সম্মেলন হচ্ছে। দুদিনের এ সম্মেলনে দেশের আর্থিক খাতের বিশ্লেষক, ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও ঋণ গ্রহিতারা মতামত দেবেন।