ঢাকার কাছাকাছি একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার স্থাপনের জায়গা নির্বাচনের জন্য পূর্ত সচিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
Published : 20 Jul 2014, 11:22 PM
সোমবার আন্ত:মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই কমিটি কনভেশন সেন্টার স্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত তিনটি জায়গা থেকে সুবিধামত একটি জায়গা নির্বাচনের কাজ করবে।”
আগামী দুই মাসের মধ্যে কমিটি এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পেশ করবে বলেও জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল ইনুসহ সংশ্লিস্ট মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রসাশক উপস্থিত ছিলেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন,“এই সেন্টারটি স্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে চারটি জায়গা নির্বাচন করা হয়েছিলো। তারমধ্যে তিনটি জায়গায় এটা করা যেতে পারে বলে আমরা সবাই একমত হয়েছি। এই তিনটি জায়গার মধ্যে কোথায় করলে সবচেয়ে ভালো হবে সেজন্য পূর্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
“কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয়, সড়ক বিভাগের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কমিটি আগামী দুই মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিবে। কমিটি চাইলে এসব জায়গার বাইরেও সুপারিশ করতে পারবে। একইসাথে কনভেনশন সেন্টারের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য সুপারিশ করতে পারবে। আমরা তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিবো।” বলেন অর্থমন্ত্রী।
কোন কোন জায়গা প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে তা বলতে চাননি অর্থমন্ত্রী। আর খরচের হিসাবও দেননি।
কাজটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ভিত্তিতে করা হবে বলে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এই কনভেনশন সেন্টারের জন্য ১০০ থেকে ১৫০ বিঘা জমি প্রয়োজন। এর পাশে বিমানবন্দর, রেল লাইন স্থাপন করা হবে।”
তিনি বলেন,“বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অনেক আকর্ষণীয় দেশ। অনেকেই আমাদের এখানে সম্মেলন করতে চায়। আমরা জায়গা দিতে পারি না। আন্তর্জাতিক চাহিদা ও অভ্যন্তরীণ বিষয় চিন্তা করেই এই কনভেনশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
অর্থমন্ত্রী জানান, এই কনভেনশন সেন্টারে ৫ হাজার আসনের ১টি গ্যালারি ও ৫০০ আসনের ২টি গ্যালারি থাকবে। থাকবে ২০০ আসনের ১০টি সেমিনার কক্ষ। প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীদেরসহ প্রায় ১০০টি বিভিন্ন ধরনের দপ্তর থাকবে।
ক্যাফেটরিয়া, রেঁস্তোরা ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠতে পারে। কাছাকাছি এলাকায় দুটি হোটেল, একটি শপিং প্লাজা ও একটি এক্সিবিশন হল রাখা হবে। থাকবে ৫০০ গাড়ি রাখার একটি পার্কিং ব্যবস্থা।
এই কনভেশন সেন্টার বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সেন্টারটি ঢাকা-মাওয়া বা ঢাকা-দোহার রাস্তার পাশে স্থাপন করা যেতে পারে। এই কনভেনশনের জন্য যে জমি অধিগ্রহণ করা হবে তার বেশিরভাগ জমি নির্দিষ্ট উদ্দেশে বেসরকারি খাতে নিলামে বিক্রি করা হবে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘পিপিপি দপ্তর ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে যেখানে কনভেনশন সেন্টার করা হবে সেই পর্যন্ত একটি উড়াল সড়ক বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে।’
চীন সরকারের কাছে এই সেন্টার স্থাপনে সহায়তা চাওয়া হতে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়ে চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, “চীন সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত ভালোভাবে কনভেনশন হল নির্মাণ করছে। বাংলাদেশে একটি এক্সিবিশন হল নির্মাণের জন্য চীন সরকারের প্রস্তাব আমাদের বিবেচনায় আছে।
“আমি চীনের রাষ্ট্রদুতকে বলেছি যে, এই প্রস্তাবের বিপরীতে আমরা হয়ত একটা কনভেনশন সেন্টারের জন্য সহায়তা চাইতে পারি।”
এরকম কনভেনশন সেন্টার স্থাপনে ৩০ কোটি ডলারের প্রয়োজন বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।