দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে থাকা দলটির মহাসচিব বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নিজেদের জোট শরিক দল এনপিপির এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
বিএনপির বর্জনের মধ্যে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা অভিযোগবিদ্ধ নির্বাচনের সমালোচনার জবাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়টিই সামনে নিয়ে আসছেন।
সরকারি দলের নেতারা মন্দার মধ্যেও প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে রাখা, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া, রিজার্ভ সমৃদ্ধ করা, মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখার সঙ্গে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলছেন, যার মধ্যে নিজস্ব আয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়টিও রয়েছে।
এর পাল্টায় ফখরুল বলেন, “এমনভাবে উন্নয়নের চিত্র দেখানো হচ্ছে যেন উন্নয়নের লহর বয়ে যাচ্ছে। মানুষের কোনো অভাব নেই, মধ্যম আয়ের দেশে চলে গেছে ইতোমধ্যেই, চতুর্দিক থেকে শুধু সমৃদ্ধি আর সমৃদ্ধি।
“পত্র-পত্রিকাগুলো ভালোভাবে দেখেন, দেখবেন এগুলো জনগণকে প্রতারণার শামিল। আপনাদের (সরকারের) লোকেরা বড় হচ্ছে, আপনাদের মদদপুষ্ট যারা, আপনাদের আত্বীয় স্বজন যারা, আপনাদের বন্ধ-বান্ধব যারা, তারা বিশাল থেকে বিশাল হচ্ছে, আর গরিব মানুষ আরও গরিব হচ্ছে- এই হচ্ছে উন্নয়ন।”
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফখরুল বলেন, “আজকে যে কথা বলা হয় প্রবৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ। আমাদের সময়ে প্রবৃদ্ধি যা ছিল, সেখানেই তো পৌঁছাতে পারেনি। আজকে যে ইমার্জিং টাইগারের কথা বলছেন, সেটা ২০০৫ সালে গোল্ডম্যান সাকস আমাদেরকে, বাংলাদেশকে বলেছে। ওই সময়ে পত্র-পত্রিকাগুলো দেখুন, গোল্ডম্যান সাকস কী বলেছিল, অর্থনীতিবিদরা কী বলেছিলেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি নিয়ে কিছুকাল শিক্ষকতায় থাকা ফখরুল অর্থনীতির চালচিত্র নিয়ে সরকারকে বিতর্কের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন, আমরা এই নিয়ে বির্তক করি।
“আপনারা আপনাদের পরিসংখ্যান ব্যুরোতে যেসব ডাটা দিচ্ছেন, আসুন সেগুলো নিয়ে সামনাসামনি বির্তক করি। দেখবেন, সব কিছু শুভঙ্করের ফাঁকি, মানুষকে বোকা বানানোর কাজ চলছে।”
উদাহরণ হিসেবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যে ওভারব্রিজ একটা ২ হাজার কোটি টাকা এস্টিমেট করা হল, দেখা যাচ্ছে সেটা গিয়ে ঠেকছে ১০ হাজার কোটি টাকায়। যে পদ্মা সেতু ৮ হাজার কোটি টাকার কথা বলা হয়েছিলো, তা এখন ছাড়িয়ে গেছে ৩০/৪০/৫০ হাজার কোটি টাকায়। ওইটা হিসাবও তো নেই, কী একাউন্টস, কোথায় কী খরচ হচ্ছে- কেউ বলতে পারবে না।
“আমি চ্যালেঞ্জের সঙ্গে বলছি, ব্যবসায়ীদের নিরপেক্ষভাবে জিজ্ঞাসা করুন, তারা ভালো আছেন, না খারাপ আছেন। রেমিটেন্স নামছে, অলরেডি ১৭% নেমে গেছে। বিদেশি বিনিয়োগ কোথায়? যেগুলো নিচ্ছেন সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট, ঋণের বোঝা আরো বাড়ছে, প্রচণ্ডভাবে বাড়ছে- এই হচ্ছে বর্তমান অর্থনীতির অবস্থা।”