স্থানীয় সরকার পুনর্গঠনই বড় সমস্যা: অর্থমন্ত্রী

প্রবৃদ্ধির বর্তমান অবস্থান ধরে রাখতে শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর পুনর্গঠনকেই বর্তমানে বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2017, 11:24 AM
Updated : 19 Jan 2017, 02:04 PM

বৃহস্পতিবার পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে পারলে প্রবৃদ্ধি ৮-১০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতে পারে।

“আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা স্থানীয় সরকাকে রিস্ট্রাকচারিং করা। আয়তন কম হলেও জনসংখ্যা অনেক বড়। এরা আবার শিক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে। আমার মনে হয়, প্রশাসনিক সংস্কার প্রয়োজন। কেবল সিদ্ধান্ত নেওয়া নয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্বও স্থানীয় সরকারের হাতে যেতে পারে। এ ব্যাপারে আমাদের চিন্তা ধারাও খুব স্বচ্ছ নয়।

স্থানীয় সরকার পর্যায়ে কাজ খুব কম হয় বলেও মন্তব্য করেন মুহিত।

“সরকারের বিভিন্ন যেসব প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন উদ্যোগে সম্পৃক্ত, তাদের অধীনস্ত হিসেবে স্থানীয় সরকার কাজ করে। সে কাজগুলো স্থানীয় সরকারে খুব কম হয়। সে কাজগুলো এসব প্রতিষ্ঠানের নিম্নতম পর‌্যায়ের কর্মচারীরাই করে।

“এটা পরিবর্তন কী করে করা যায়, সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ এবং কষ্টকর। কারণ আমাদের যে ১৮ লাখ ব্যুরোক্রেসি আছে, তারা কোনভাবেই  সেই ক্ষমতার প্রতি সংস্থাপন হতে দেন না। চাইলে না চাইলেও অটোমেটিক তারাই সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে যায়।

তাই স্থানীয় সরকার সম্পর্কে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কঠোর সিদ্ধান্ত  প্রয়োজন বলে মত দেন তিনি।

প্রবৃদ্ধি হার ৭ শতাংশে রাখতে স্থানীয় সরকারের কাঠামো, দায়িত্ব, অর্থায়ন- এগুলো নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করার পক্ষেও প্রধানমন্ত্রীও একমত বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

“১/২ লাখ কেন্দ্রীয় সরকারে রেখে ১৮ লাখ কর্মচারীদেরকে স্থায়ীভাবে জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।  ওখানেই তাদের ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে। সেটা যদি করা যায়, তাহলে হয়তো একটা পরিবর্তন করা যেতে পারে।

“৫০ থেকে ৬০টি দেশ আছে, যারা আমাদের চেয়ে ছোট। প্রায় একই সংখ্যক দেশ আছে যাদের জনসংখ্যা কম। তার মানে আমাদের জেলা ইউনিট অটোনোমাস স্টেট হওয়ার মত। স্টেটের দিকে আমাদের যাওয়া উচিত।তাহলে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮-১০ শতাংশ সম্ভব হবে।”

পিআরআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ তার প্রবন্ধে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে সবকিছুই ইতিবাচক। কেবল একটা বিষয়ই নেতিবাচক। সেটা হচ্ছে, আয় বৈষম্য বেড়েছে। তার মানে, যেখানে প্রত্যেকের সমান সুযোগ থাকবে, প্রত্যেকের অংশগ্রহণ থাকবে, সেটা এখনও বাস্তবায়িত হয় নাই।

“আমরা নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হয়ে গেছি, উচ্চ মধ্য আয়ের দেশ হবো। ওই অবস্থায় যেতে হলে আমাদেরকে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। ব্যবধান কমাতে হবে।

স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় উন্নতি হলেও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো যায়নি উল্লেখ করে তিনি দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা ব্যবস্থা করার পক্ষে বলেন।

সেমনারেও অধ্যাপক জিল্লুর রহমান খান ও তাজিন মোরসেদ আরও দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।