রিজার্ভ চুরি: নিউ ইয়র্ক ফেড- সুইফটের বিরুদ্ধে ‘মামলায় যাচ্ছে না’ বাংলাদেশ

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ও আন্তঃব্যাংক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান সুইফটের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বললেও এখন সেই অবস্থান থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সরে এসেছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2016, 06:02 PM
Updated : 16 August 2016, 06:02 PM

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, “এই মুহূর্তে ফেডারেল ব্যাংক বা সুইফটের বিরুদ্ধে আইনি কোনো পদেক্ষপ নেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের নেই; বরং আমরা তাদের সহযোগিতা চাইব।”

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা অবস্থান বদলের কারণ বলতে চাননি।

নিউ ইয়র্ক ফেড ও সুইফটের ভুলের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয় দাবি করে গত মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সূত্র ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছিল বলে রয়টার্স বলছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও গত মার্চে আইনি ব্যবস্থার কথা বিবেচনার কথা বলেছিলেন।

তবে মঙ্গলবার শুভঙ্কর সাহার বক্তব্য উদ্ধৃত করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, “আমরা আইনি পদক্ষেপসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে শুধু চিন্তা করেছি। আমরা ফেডারেল ব্যাংক ও সুইফট দুই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেই সহযোগিতার দিকে এগোচ্ছি।”

এই বিষয়ে বক্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে অর্থমন্ত্রী মুহিতকে না পাওয়ার কথা জানিয়েছে রয়টার্স।

বার্তা সংস্থাটি বলছে, মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে ফেডারেল ব্যাংক ও সুইফট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের বৈঠক শুরুর আগে মামলার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার এই বক্তব্য আসে।

এছাড়া গত সপ্তাহে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে তার স্ট্যান্ডার্ড চুক্তি প্রকাশ করে; যাতে বলা  হয়, কোনো সাইবার নিরাপত্তা ভাঙার ঘটনা বা তা প্রতিরোধের দায়িত্ব মূলত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের… এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের।

The Swift bank logo is pictured in this photo illustration taken April 26, 2016. Reuters

তবে এই চুক্তি ও মামলার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের মধ্যে কোনো যোগসূত্র নেই দাবি করে শুভঙ্কর সাহা রয়টার্সকে বলেন, “আমরা বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে সহযোগিতাকেই সবচেয়ে ভালো মনে করছি।”

নিউ ইয়র্কের বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়া প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান রয়টার্সকে বলেছেন, ওই স্ট্যান্ডার্ড ফেডারেল কন্ট্রাক্টের আওতায়ই সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

তবে মামলা করা বা না করা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।  

গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে ৩৫টি ভুয়া নির্দেশনা পাঠিয়ে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ সরানোর চেষ্টা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি নির্দেশনায় ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপিন্সে চলে গেলেও বানান ভুলসহ পদ্ধতিগত ক্রুটি থাকায় বাকি অর্থ আটকে যায়।

বিষয়টি টের পাওয়ার পর চুরি যাওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলার আটকাতে নির্দেশনা পাঠালেও যথাসময়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ বাংলাদেশ ব্যাংকের। এছাড়া সুইফট সিস্টেমে ত্রুটির কারণেই হ্যাকাররা এ ধরনের সুযোগ পায় বলেও সে সময় বলা হয়েছিল।