‘ডিসেম্বরের মধ্যেই ই-টেন্ডারে’ হবে সরকারি ক্রয়

চলতি বছরের মধ্যেই সব ধরনের সরকারি ক্রয় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি বা ই-টেন্ডারের মাধ্যম করতে নতুন একটি ‘ডাটা সেন্টার’ স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2016, 04:25 PM
Updated : 25 July 2016, 04:25 PM

নতুন ‘ডাটা সেন্টার’ স্থাপিত হলে বর্তমানটির থেকে ধারণ ক্ষমতা ১৮০ গুণ বেড়ে ২০০ টেরা-বাইটে উন্নীত হবে। আর এ লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক থেকে অতিরিক্ত এক কোটি ডলার ঋণ নিতে যাচ্ছে সরকার।

সোমবার বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এ বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যাতে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম ‍এবং বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক পরিচালক রাজশ্রী এস পারালকার স্বাক্ষর করেন।

ছয় বছরের রেয়াতকালসহ ৩৮ বছরে মাত্র শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে বিশ্বব্যাংককে এ ঋণ ফেরত দিতে হবে।

স্বাক্ষরের পর অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের জানান, গণখাতে ক্রয় কার্যক্রম উন্নয়নের জন্য ২০০৭ সালে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্মস প্রজেক্ট (পিপিআরপি-২) প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। বিশ্বব্যাংক এতে দুই কোটি ৩৬ লাখ ডলার ঋণ দেয়।

পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বিশ্বব্যাংক আরও তিন কোটি ৪৫ লাখ ডলার ঋণ দেয়। এখন এ ডাটা সেন্টারের ক্ষমতা বাড়াতে আবারও এক কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে।

‘স্টেট অব দ্যা আর্ট ডাটা সেন্টার’ নামের এ ডাটা সেন্টার স্থাপন করবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)।

কাজী শফিকুল আযম বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহাতায় এই ডাটা সেন্টার স্থাপিত হলে সরকারি কেনাকাটায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে। ডাটা সেন্টারটির মাধ্যমে ই-জিপি কার্যক্রম স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে।

অনুষ্ঠানে সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক ফারুক হোসেন বলেন, “এই ডাটা সেন্টার স্থাপন হলে ২০১৬ সালেই সরকারি সব সংস্থাকে ই-টেন্ডারের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।”

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, এ অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে একটি নতুন স্টেট অব-দ্য-আর্ট ডাটা সেন্টার তৈরি হবে, যার ধারণ ক্ষমতা হবে ২০০ টেরাবাইট।

এছাড়াও একটি মিরর সাইট স্থাপিত হবে, যা বর্তমানের নিম্ন ধারণ ক্ষমতার ডাটা সেন্টারকে প্রতিস্থাপন করবে।

মিরর সাইটটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা অধকিতর উন্নত হবে এবং বর্তমান ডাটা সেন্টারের ১৮০ গুণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে যেখানে প্রায় ৮৬ লাখ টেন্ডার সংরক্ষণ করা যাবে এবং তিন লাখ ২৫ হাজার নিবন্ধিত দরদাতার তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে।

এতে আরও জানানো হয়, ২০০৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাংকের সহাতায় ‘পাবলকি প্রকিউরমেন্ট রিফর্মস প্রজেক্ট-২’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়ে আসছে। এই প্রকল্পের আওতায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়।

ইতোমধ্যেই সরকারি চার সংস্থা- সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে এর আওতায় আনা হয়েছে।

এ প্রকল্পের ফলে সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা আনয়ন এবং দৃশ্যমান অগ্রগতি যেমন – টেন্ডার প্রক্রিয়াকরণের সময় ২০১২ সালের ৫১ দিন থেকে ২০১৫ সালে ২৯ দিনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলেও জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক ফারুক হোসেন বলেন, “২০১৬ সালের মধ্যে সরকারের সকল ক্রয়ে ই-টেন্ডার চালু করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু ডাটা সেন্টারের ধারণক্ষমতা কম থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

“এজন্য ২০০ টেরাবাইট ধারণক্ষমতার একটি নতুন ডাটা সেন্টার স্থাপন করতেই বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে এ অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া হচ্ছে।”