রূপপুরের জন্য ১,১৩৮ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন রাশিয়ার

পাবনার রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশের জন্য ১,১৩৮ কোটি ডলারের ঋণ চূড়ান্ত করেছে রাশিয়া।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2016, 08:31 AM
Updated : 19 July 2016, 10:21 AM

রুশ সরকার সোমবার এই ঋণ অনুমোদন দেয় বলে দেশটির স্বায়ত্তশাসিত সংবাদ মাধ্যম আরটি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

১,২৬৫ কোটি ডলারের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের বাকিটা অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার।

এর আগে ২৭ জুন রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার কাছ থেকে ঋণ নিতে আন্তঃরাষ্ট্রীয় ঋণচুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দেয় সরকার।

ওই দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে ১,১৩৮ কোটি ডলারের এই ঋণ সরবরাহ করা হবে। প্রস্তাবিত অর্থায়ন শুরুর পর থেকে ১০ বছর থাকবে গ্রেস পিরিয়ড। এর পর থেকে ৩০ বছরের মধ্যে পুরো ঋণ শোধ করতে হবে।

মূল ঋণের প্রথম কিস্তি ২০২৭ সালের ১৫ মার্চ থেকে দেওয়া শুরু হবে, সুদের হার হবে অনূর্ধ্ব ৪ শতাংশ। প্রতি বছরের ১৫ মার্চ ও ১৫ সেপ্টেম্বর সমপরিমাণ কিস্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

দেশের প্রথম এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর রুশ প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চুক্তি হয়।

সে অনুযায়ী, ১,২৬৫ কোটি ডলারের মোট ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হবে।

৫০ বছর আয়ুর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা নির্মাণের প্রস্তুতিমূলক কাজ ২০১১ সালে শুরু হয়েছে।

এর পর ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৪ সালের অগাস্টে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় কোম্পানি গঠন করতে সংসদে বিল পাস হয়।

আইন অনুযায়ী, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ’।

১৯৬১ সালে পরমাণু কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পর ১৯৬৩ সালে প্রস্তাবিত ১২টি এলাকার মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হয় রূপপুরকে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রায় ৫০ বছর আগের নেওয়া সেই উদ্যোগ সক্রিয় করে তোলা হয়। দ্রুত পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১০ সালে সংসদে প্রস্তাব পাস করে গঠন করা হয় একটি জাতীয় কমিটি।

ওই বছরই রাশিয়ার সঙ্গে একটি কাঠামো চুক্তি করে সরকার এবং ২০১১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ দুই দেশ চুক্তি করে। প্রস্তাবিত এ কেন্দ্রের জন্য আগেই অধিগ্রহণ করা হয় ২৬২ একর জমি।

অ্যাটমস্ট্রয়ের নকশায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত ‘সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি’ দিয়ে রূপপুরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এর নিরাপত্তা নিয়ে ‘দুশ্চিন্তার কিছু’ থাকবে না।

চুক্তি অনুযায়ী, এই কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়াই ফেরত নিয়ে যাবে।