ব্যাংক খাতে ‘লুটপাটে’ সরকার চিন্তিত: মুহিত

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর একের পর এক ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশের প্রেক্ষাপটে তা নিয়ে সরকারও ‘চিন্তিত’ বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2016, 01:39 PM
Updated : 30 June 2016, 01:59 PM

ঋণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অপসারণের দিন বৃহস্পতিবারই সংসদে একথা বলেছেন তিনি।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট পাসের প্রক্রিয়া নিজের বক্তব্যে মুহিত বলেন, “এ খাতের লুটপাট নিয়ে আমরাও খুবই চিন্তিত।

“এটা যাতে আর না হয়, এজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমরা তদন্ত চালাচ্ছি এবং তদন্তের পরে মামলা হচ্ছে।”

প্রায় আটশ কোটি টাকা ঋণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে এদিন সকালেই অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদকে অপসারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুদক গ্রেপ্তার করে ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও।

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়েও গত কয়েক বছর ধরে সমালোচনার মধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। এই দুটি ব্যাংকের অনিয়মও দুদক তদন্ত করছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত (ফাইল ছবি)

বৃহস্পতিবার সংসদে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ ব্যাংক খাতের অনিয়ম নিয়ে কথা বলেন।  

তিনি বলেন, “পুলিশ রাস্তায় জনগণের টাকা ছিনতাই বন্ধ করেছে। এখন ব্যাংকগুলোতে সমস্ত ছিনতাই হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীকে এটা বন্ধ করতে হবে।

“ব্যাংকিং খাত হচ্ছে এখন লুটপাটের জায়গা। যে যত পারে লুটপাট করছে, আর ফেরত দিতে হচ্ছে না। তারা লুটপাট করবে আর আমরা টাকা দেব, এটা তো হতে পারে না।”

জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম মিলন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ২ হাজার ৫২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বরাদ্দের বিরোধিতা করে বলেন, “ব্যাংকিং খাতে যে অব্যবস্থা তাতে তাদের টাকা দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এখানে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে।”

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, “ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট হলে যে ক্যাপিটাল ঘাটতি হচ্ছে, সেটা জনগণের টাকা দিয়ে পূরণ করা হচ্ছে, সারা জীবন এ ভাবে চলতে ‍পারে না।”

ব্যাংক খাতে ‘লুটপাট’ সংসদ সদস্যদের এই উদ্বেগ দেখে অর্থমন্ত্রী তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, “বেসিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে সবগুলো মামলা এখনও হয়নি। এই রিপোর্টটি দুদকের কাছে আছে।

“তবে আপনারা নিশ্চিত থাকেন, যেসব লোকের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হয়েছে তাদের সকলকেই দুদক মামলার আওতায় নিয়ে আসবে।”